বুধবার , ৩ জুলাই ২০২৪ | ২১শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনিরাপদ পানি পান করে ৮৩.৫৪ শতাংশ পরিবার

Paris
জুলাই ৩, ২০২৪ ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ

 

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক

দেশে খাবার পানি নিরাপদ করার জন্য ৮৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ খানা বা পরিবার কোনো পদ্ধতিই ব্যবহার করে না। খাবার পানি নিরাপদ করার জন্য ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ খানায় পানি ফোটানো হয় এবং ৪ শতাংশ খানায় ফিল্টারিং মেশিন ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএসের) এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি বিবিএস আর্থসামাজিক ও জনমিতিক জরিপ ২০২৩ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের অধিকাংশ খানার ৮৬ দশমিক ২৭ শতাংশ খাবার পানির প্রধান উৎস গভীর, অগভীর অথবা সাবমার্সিবল টিউবওয়েল। অন্যদিকে ১১ দশমিক ১২ শতাংশ খানা খাবার পানির প্রধান উৎস হিসেবে সরবরাহকৃত (সাপ্লাই) পানি ব্যবহার করে।

খাবার পানির প্রধান উৎস প্রসঙ্গে বিবিএস বলছে, খাবার পানির প্রধান উৎস হিসেবে পুকুর, নদী, খাল, লেকের পানির ব্যবহার সিলেট বিভাগে সর্বোচ্চ, ২ দশমিক ৮০ শতাংশ খানায়; বৃষ্টির পানির ব্যবহার খুলনা বিভাগে সর্বোচ্চ, ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

আর্সেনিক টেস্ট: ভঙ্গুর প্রকৃতির এক ধরনের অর্ধধাতু বা উপধাতু হলো আর্সেনিক। এর মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। বাংলাদেশ সরকারের নির্ধারিত মাত্রা অনুযায়ী ৫০ পিপিবির বেশি হলে আর্সেনিকের মাত্রা ক্ষতিকর বলে ধরে নেওয়া হয়। খানার খাবার পানির প্রধান উৎস যদি টিউবওয়েল (গভীর, অগভীর, সাবমার্সিবল) হয়, তাহলে টিউবওয়েলটির পানির আর্সেনিক পরীক্ষা করা হয়েছে কিনা তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

খাবার পানির প্রধান উৎসের অবস্থান: খানার বাসগৃহের কোথায় বা বাসগৃহ থেকে কত দূরে খানার খাবার পানির প্রধান উৎস অবস্থিত তাই খাবার পানির প্রধান উৎসের অবস্থান হিসেবে বিবেচিত হয়।

খাবার পানি সংগ্রহের সময় কোনো সদস্যের খানা থেকে পানির উৎসে গিয়ে পানি সংগ্রহ করে (পানি সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করাসহ) পুনরায় খানায় ফিরে আসতে মোট যে সময়ের প্রয়োজন হয়ে থাকে তাই খাবার পানি সংগ্রহের সময়।

প্রতিবেদনে টিউবওয়েলের (গভীর, অগভীর, সাবমার্সিবল) আর্সেনিক টেস্ট, খাবার পানির প্রধান উৎসের অবস্থান এবং খাবার পানি সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় সময় সংক্রান্ত উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়েছে। উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, যে সব খানার খাবার পানির প্রধান উৎস টিউবওয়েল, তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৪ দশমিক ৬৫ শতাংশের টিউবওয়েল টেস্ট করে আর্সেনিক পাওয়া যায়নি। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩২ দশমিক ৫১ শতাংশ খানার টিউবওয়েল আর্সেনিক টেস্ট করা হয়নি।

উল্লেখ্য, ৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ খানার টিউবওয়েল টেস্ট করে আর্সেনিক পাওয়া গেছে, এ হার চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বোচ্চ, ৭ দশমিক ৫১ শতাংশ।

খাবার পানির প্রধান উৎসের অবস্থান সংক্রান্ত উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের সর্বাধিক, ৬৩ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ খানার খাবার পানির প্রধান উৎসের অবস্থান নিজ আঙিনার ভিতরে এবং ২৩ দশমিক ১৭ শতাংশ খানার খাবার পানির উৎস নিজ ঘরের মধ্যে।

খাবার পানি সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় সময় সংক্রান্ত উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, দেশের ৮৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ খানার ক্ষেত্রে উৎস থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে ১ থেকে ৫ মিনিট এবং ১০ দশমিক ৫১ শতাংশ খানার ৬ থেকে ৩০ মিনিট সময় প্রয়োজন হয়।

গৃহস্থালি ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত পানির প্রধান উৎস : সাধারণত খানার কাপড় ধোয়া, রান্না, গোসল, পয়ঃনিষ্কাশন ইত্যাদি গৃহস্থালি কাজ। সুনির্দিষ্ট যে উপায়, মাধ্যমে খানার গৃহস্থালি ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত পানি পাওয়া যায় তা সংশ্লিষ্ট খানার গৃহস্থালি ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত পানির প্রধান উৎস।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, জাতীয় পর্যায়ে ৭২ দশমিক ১ শতাংশ খানার গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত পানির প্রধান উৎস টিউবওয়েল (গভীর, অগভীর, সাবমার্সিবল), যা রংপুর বিভাগে সর্বোচ্চ, ৯৯ দশমিক ১২ শতাংশ। গৃহস্থালি কাজে ব্যবহারের জন্য পানির প্রধান উৎস হিসেবে দেশের ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ খানা সাপ্লাইয়ের পানি ব্যবহার করে, যা ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ, ৩৩ দশমিক ১৭ শতাংশ। অন্যদিকে গৃহস্থালি কাজে পুকুর/নদী/খাল/লেকের পানি ব্যবহার করে দেশের ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ খানা, এ হার বরিশাল বিভাগে সর্বোচ্চ, ৭৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

দেখা যায়, দেশের অধিকাংশ খানার (৭২ দশমিক ৮১ শতাংশ) গৃহস্থালি ও অন্যান্য কাজে ব্যবহারের জন্য পানির প্রধান উৎস গভীর, অগভীর, সাবমার্সিবল টিউবওয়েল। একইভাবে ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ খানা পুকুর, নদী, খাল, লেক এবং ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ খানা গৃহস্থালি ও অন্যান্য কাজে ব্যবহারের জন্য পানির প্রধান উৎস হিসেবে সাপ্লাইয়ের পানি ব্যবহার করে।

 

সর্বশেষ - জাতীয়