‘অটো পাস’ নয়, ‘মেধার ভিত্তিতে মূল্যায়ন’ অভিমত শিক্ষাবিদদের

নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘অটোপাস’ এমন কথার বিরম্বনায় পড়তে হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা পরিসরে ‘অটোপাস’ ফল নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা অস্বস্তিতে ফেলেছে শিক্ষার্থীদের।

তবে শিক্ষাবিদরা বলছেন- এইচএসসির এই ফলাফল জেএসসি ও এসএসসির ফল স্বরূপ। ওই দুই পরীক্ষার ফলের মতোই এইচএসসির ফলাফল পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। এটা শিক্ষার্থীদের গত পাঁচ বছরের ধারাবাহিকতার ফল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আর শিক্ষার্থীরা বলছে- অটোপাসের বিষয়টি মেধার মূল্যায়নের ভিত্তিতে হয়েছে। রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড বলছে- বিশেষ মূল্যায়ন পদ্ধতিতেও পরীক্ষার্থীদের আলাদা ভাবে নম্বর দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ের মতো নম্বরপত্রে তা উল্লেখ থাকবে। যা বিগত বছরগুলোতে ছিলো। উচ্চ শিক্ষায় ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাপ্ত ওই সব নম্বর ভূমিকা রাখবে। তবে পাসকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় চ্যালেঞ্জ বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন অবস্থায় উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি যুদ্ধটা বেশি কঠিন হবে। ভর্তিতে অনেককে পেছনে ফেলে নিজের জায়গা খুঁজে নিতে হবে শিক্ষার্থীদের।

এক্ষেত্রে মেধাবীরাই ভর্তিতে জয়ী হবে বলে ধারণা মাহামুদুল ইসলাম তাজ নামের এই শিক্ষার্থীর। এই শিক্ষার্থী জানান-‘জেএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছি। এইচএসসিতেও একই রেজাল্ট। এমন ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি। সেই জায়গা থেকে মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদনও পড়বে বেশি। কিন্তু পরীক্ষাগুলো কঠিন হবে। এমসিকিউ পরীক্ষায় পার হয়ে গেলে রির্টানে মেধাবী ছাড়া বাকিরা আটকে (অকৃতকার্য হবে) যাবে।’

‘অটোপাস’র বিষয়ে মাহামুদুল ইসলাম জানান, এটা ‘অটোপাস’ বলা যাবে না। যাদের জেএসসি ও এসএসসির ফলাফল ভালো। তারা এইচএসসিতেও ভালো ফল পেয়েছে। করোনাকালীন ‘অটোপাস’ এছাড়া উপায়ও ছিলো না।’ রাজশাহী কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রমোদ চন্দ্র সরকার বলেন- আগের রেজাল্ট গড় করে এই ফলাফল হয়েছে। করোনাকালে এটা একটা ভালো সিদ্ধান্ত ছিলো। শিক্ষার্থীরা নিজের মেধা মনন দিয়ে এই ফল পেয়েছে। ফ্রি ফ্রি এই রেজাল্ট হয়নি। যারা ‘অটোপাস’ বলছেন- আপনারা এটা বলবেন না। কারণ আপনারা যদি এই পরিস্থিতির শিকার হতেন, আপনাদের মেনে নিতে হতো।’

শিক্ষাবোর্ডে সূত্রে জানা গেছে- এইচএসসির এই ফলাফল, প্রতিটি শিক্ষার্থীদের গত পাঁচ বছরের ধারাবাহিকতার ফল। যারা জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা জিপিএ-৫ পেয়েছে। করোনা মহামারিকালের এই বিশেষ মূল্যায়নেও তাদের একই ফলাফল পেয়েছে।

অন্যদিকে, ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্টি না থাকলেও মেডিকেল ও বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে শিক্ষার্থী রাসেদুজ্জামান পিয়াস মনে করেন।

তিনি আরও জানান, মেডিকেলে প্রতিবছর ৯০ থেকে ১ লাখ পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। সেখানে এবছর দেড় লাখের বেশি পরীক্ষার্থী থাকতে পারে। সেখানে প্রতিযোগিতাও অনেক হার্ড হবে। আবার সবাই বলছেন অটোপাস। রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আসরাফুল ইসলাম বলেন, নম্বর পত্রে বিষয় ভিত্তিক প্রাপ্তি উল্লেখ থাকবে।’

স/অ