নিজস্ব প্রতিবেদক:
বর্তমানে হিজাবের বিবর্তন বেশ লক্ষ্য করার মতো। ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির পাশাপাশি নিরাপত্তা, স্বাচ্ছন্দ্য ও সৌন্দর্য্য বর্ধনেও হিজাব গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। কিছুদিন আগেও শুধু পর্দা করার জন্যই হিজাব পরা হতো। কিন্তু বর্তমানে সব বয়সি নারী ও তরুণীদের কাছে হিজাবের ব্যবহার ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্কুল-কলেজ, নানা ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানসহ কর্মস্থলেও মেয়েরা অনায়াসে ব্যবহার করছেন হিজাব। পর্দা করা ছাড়াও হিজাবের রয়েছে নানা উপকারী দিক। বাইরের ধুলাবালি থেকে ত্বক ও চুলের সুরক্ষায়ও এর ভূমিকা রয়েছে।
যেকোনো পোশাকের সঙ্গেই যেমন শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, কুর্তা, ফতুয়া বা অন্য যে কোনো পোশাকের সঙ্গে এখন ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে হিজাব। মুসলমানদের মধ্যে বিয়ের কনের সাজকে আরো জমকালো করতেও আজকাল আনেকের কাছেই বেশ গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে হিজাব।
সপুরা সিল্ক শো-রুমে হিজাব কিনছিলেন রাবি শিক্ষার্থী আয়শা। তিনি জানান, রঙ বেরঙের হিজাব বিভিন্ন স্টাইলে পরতে তার ভালো লাগে। শুধু পর্দা করার উদ্দেশ্যে না সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই তিনি হিজাব ব্যবহার করেন। বিভিন্ন ধরনের হিজাব এবং ব্রোচ কালেকশন করা তার একটা শখে পরিণত হয়েছে এখন।
হিজাবকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে হিজাবের সঙ্গে পরার জন্য বাজারে এখন স্টোন, পুতি, চেইন নানা ধরনের পাথর ও পুতির বিভিন্ন ডিজাইন করা ব্রুজ পাওয়া যায়।
রাজশাহী সিটি কলেজের শিক্ষার্থী কেয়া বলেন, বিভিন্ন স্টাইলে হিজাব পরতে শিখেছেন তিনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইউটিউব এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে বিভিন্ন স্টাইলে হিজাব পরার কায়দা সে রপ্ত করেছে।
বাজারে কটন, লেস, জর্জেট, সিল্ক, নেট ও সাটিনসহ নানা ধরনের কাপড়ের হিজাব পাওয়া যায়। তাই ব্যবসায়ীরাও ক্রেতার চাহিদার ভিত্তিতে বাজারে নিয়ে আসছে নানা ধরনের ফ্যাশনেবল হিজাব। হিজাবে এসেছে ফ্লোরাল মোটিফ। ব্যবহার করা হয়েছে স্টোন, পুঁতি, কাপড়ের ঝালর, লেস এবং সুতা। কাপড়ের মান ও নকশার উপর ভিত্তি করে হিজাবগুলো পাবেন ২০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত দরে।
তবে সংস্কৃতিকর্মী মনিরা রহমান মিঠি মনে করেন, ফ্যাশন বা ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির চেয়েও বড় কথা হচ্ছে হিজাবের মাধ্যমে মেয়েরা নিজেদেরকে সবার থেকে নিজেকে আলাদা করার ব্যাপারে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। হিজাবীদের মধ্যে ‘মানুষ’ হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেয়ার চেয়ে ‘রক্ষণশীল’ পরিচয়ে পরিচিত হবার প্রবণতাটা মারাত্মক আকার ধারণ করছে। এর ফলে খুব একটা ভালো হবে না বলেই তাঁর মনে হয়।
স/আ