সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা সাইয়েদ আলি খামেনি হিজবুল্লাহর প্রয়াত মহাসচিব শহিদ সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহর সাহস এবং কৌশলগত দূরদর্শিতার প্রশংসা করেছেন, যা লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটির উল্লেখযোগ্য শক্তি এবং প্রভাবের জন্ম দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার তেহরানে ইরানের অ্যাসেম্বলি অব এক্সপার্টস সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকে খামেনি এ কথা বলেন।
হিজবুল্লাহ অপরাজেয়
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, হিজবুল্লাহ এমন এক শক্তি হয়ে উঠেছে, যাকে শত্রুরা পরাজিত করতে পারেনি। যদিও তারা সমস্ত সামরিক, মিডিয়া এবং রাজনৈতিক সম্পদ ব্যবহার করে ফায়দা নিচ্ছে।
তিনি বলেন, সাইয়েদ নাসরুল্লাহ ‘একটি স্থায়ী উত্তরাধিকার রেখে গেছেন। আর তা হলো- হিজবুল্লাহ’। যা গত চার দশকে একটি ছোট যোদ্ধা দল থেকে একটি শক্তিশালী শক্তিতে পরিণত হয়েছে এবং একাধিকবার ইসরাইলি দখলদারিত্বকে লেবাননের এলাকা থেকে প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছে।
খামেনি বলেন, ‘কেউ যদি মনে করে যে, হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে গেছে, তারা ভুলের মধ্যে আছে। একদিন গোটা পৃথিবী দেখবে- কিভাবে এই প্রতিরোধ যোদ্ধারা দখলদার ইসরাইলকে পরাজিত করবে’।
তিনি আরও বলেন, ‘শত্রু এই সংগঠনকে পরাজিত করতে পারেনি এবং ইনশাআল্লাহ তারা কখনও পারবেও না। একদিন বিশ্ব দেখবে যে, ইসরাইলি দখলদাররা এই যোদ্ধাদের হাতেই পরাস্ত হবে’।
হামাসের সাফল্য
আলি খামেনি এ সময় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের উল্লেখযোগ্য সাফল্যও তুলে ধরেন। তিনি জানান, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনটি ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৯ বার ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করেছে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে বহু বছরের সংগ্রামের পর হামাস এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী বহুবার তাদের শক্তি ও দৃঢ়তার প্রমাণ দিয়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোর ব্যাপক সমর্থন সত্ত্বেও ইসরাইল হামাসের প্রতিরোধ আন্দোলনকে কখনোই ধ্বংস করতে সক্ষম হয়নি। বরং ইসরাইল হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনির জীবন কেড়ে নিয়ে নিজেদের হিংস্রতা এবং অমানবিকতা বিশ্ববাসীর সামনে উন্মোচন করেছে’।
হামাসের সংগ্রাম এবং ইসরাইলের পরাজয়
সাইয়েদ আলি খামেনি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘হামাস এখনও লড়াই করছে, এখনও প্রতিরোধ সংগ্রামে এগিয়ে যাচ্ছে। এর মানে হলো ইসরাইলি দখলদারিত্বের পরাজয়। হামাস তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাবে, এবং ইসরাইল তাদের এহেন কৌশলে কখনই সফল হবে না’।
এ সময় হিজবুল্লাহ ও হামাসের শহিদ নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা
জানান খামেনি। তিনি শহিদ হাসান নাসরুল্লাহ, হিজবুল্লাহর শীর্ষ কর্মকর্তা সাইয়েদ হাসেম সাফিয়েদ্দিন, হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া এবং ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং ইরানী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর জেনারেল আব্বাস নিলফোরোশানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
প্রতিরোধ সংগ্রামে এই শহিদ নেতাদের অপরিসীম অবদান এবং তাদের নেতৃত্বের জন্য তিনি তাদের স্মরণ করেন।
প্রতিরোধ ফ্রন্টের বিজয় নিশ্চিত
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, হামাস এবং হিজবুল্লাহ তাদের গত কয়েক দশকের বিজয় এবং অবিচল প্রতিরোধের ফলে সাম্প্রতিক ঘটনা ও পরিস্থিতি নিশ্চিতভাবেই প্রতিরোধ ফ্রন্টের বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাবে।
খামেনি আরও বলেন, এই অঞ্চলে ও বিশ্বে প্রতিরোধের শক্তি আরও বেড়ে উঠবে এবং একদিন ইসরাইল ও তার পুতুল রাষ্ট্রগুলোর জন্য এটি একটি বিপর্যয়কর পরিণতি বয়ে আনবে।
সাইয়েদ আলি খামেনি এ সময় ইরান ও প্রতিরোধ বাহিনীর শক্তি, সাহস এবং ধারাবাহিক সংগ্রামকে একত্রিত করে পৃথিবীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই প্রতিরোধই একদিন বিশ্বকে ইসরাইলের পরাজয় এবং দখলদারিত্বের সমাপ্তি নিশ্চিত করবে।
সূত্র: যুগান্তর