নেপালকে কাছে পেতে পাঁচ হাজার ৬০০ কোটি রুপি (৫৬ বিলিয়ন) সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দেশটির উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে এ অর্থ ব্যয় হবে।
দু’দিনের ঐতিহাসিক নেপাল সফরের প্রথম দিন শনিবার এ ঘোষণা দেন তিনি। দীর্ঘ ২৩ বছরের ব্যবধানে প্রথম কোনো চীনা রাষ্ট্রপ্রধানকে ফের বরণ করল নেপাল।
কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জিনপিংকে স্বাগত জানান নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারি। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে আলোচনায় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উঠে এসেছে।
নেপালের প্রেসিডেন্ট দফতর থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা হয়েছে। এ বৈঠকেই দুই বছরের মধ্যে ৫ হাজার ৬০০ কোটি নেপালি রুপি সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শি।
পাশাপাশি রাজধানী কাঠমান্ডুর সঙ্গে তাতোপানি ট্রানজিট পয়েন্টের সংযোগ হাইওয়ে উন্নয়ন এবং সেখানে আরও অধিক কাস্টমস পয়েন্ট খোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। ২০১৫ সালের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর হাইওয়েটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।
এ ছাড়া ট্রান্স-হিমালয়ান রেলওয়ে এবং কেরাং-কাঠমান্ডু টানেলের নির্মাণকাজ শিগগিরই শুরু হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
শি জিনপিং বলেন, বিশ্বে বন্ধুত্বের একটি মডেল আমরা। দু’দেশের মধ্যে আর কোনো স্বার্থ নেই। চীন ও নেপালের মধ্যে বন্ধুত্ব, অংশীদারিত্ব এবং সমৃদ্ধির মাত্রা আরও উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন শি এবং বিদ্যাদেবী। নিকট ভবিষ্যতে দু’দেশের মধ্যে আরও নির্ভরযোগ্য এবং সহজ সংযোগ সুবিধা নিশ্চিত হবে বলেও জানান শি।
তিনি বলেন, ‘নেপালকে একটি স্থলবেষ্টিত দেশ থেকে স্থলসংযোগের দেশে পরিণত করতে চাই।’ পাশাপাশি পর্যটক আকর্ষণে নেপালের ভূমিকম্প পরবর্তী প্রকল্প ‘ভিজিট নেপাল ইয়ার-২০২০’, শিক্ষা খাত এবং নগর উন্নয়নে সমর্থন দেয়ার কথা বলেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
চীনের এক সন্তাননীতির সমর্থন দিয়ে বিদ্যাদেবী বলেন, ‘বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবহার হবে এমন কোনো শক্তিকে বরদাশত করবে না নেপাল।’
নেপালের রাজনৈতিক ঘটনাক্রমে রাজতন্ত্র উচ্ছেদ নিয়ে দীর্ঘ লড়াইয়ের কিংবদন্তি কমিউনিস্ট নেতা ছিলেন মদন ভাণ্ডারি। তার স্ত্রী বিদ্যাদেবী প্রেসিডেন্ট হতেই চীন থেকে এসেছিল বিশেষ শুভেচ্ছা। উপহারের ডালি নিয়ে তাই নেপালে সফরে এলেন শি।
এ ছাড়া বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেসের নেতা শেন বাহাদুর দেউবা এবং নেপালি কমিউনিস্ট পার্টির সহকারী চেয়ারম্যান পুষ্প কমল দাহালের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
তিব্বতের সঙ্গে সীমান্তের বিশাল অংশজুড়ে রয়েছে নেপাল। তাছাড়া নির্বাসিত প্রায় ২০ হাজার তিব্বতীয় নেপালে বসবাস করেন। এছাড়া নির্বাসিত ৮৪ বছর বয়সী দালাইলামার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রতি বছর আড়াই হাজার তিব্বতীয় অবৈধভাবে নেপালে প্রবেশ করেন।