সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
সংবেদনশীল তথ্য রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে বেশকিছু হাই-প্রোফাইল বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার পর ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলার অভিযোগ করা হচ্ছে। ডেমোক্র্যাট ও ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নতুন করে গোপন তথ্য ফাঁস ও সাইবার হামলার ঝুঁকি সৃষ্টি করেছেন।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তার প্রশাসনের নিরাপত্তা পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। শনিবার bcngdscngdসেই ধারাবাহিকতায় আবারও তার ওই নিরাপত্তা পদ্ধতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়, যখন ফ্লোরিডায় ব্যক্তিগত মার-আ-লাগো ক্লাবে তিনি অতিথিদের সঙ্গে সময় কাটানোর সময় ফোনে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কথা জানানো হয়।
মার-আ-লাগো ক্লাবে থাকা ট্রাম্পের এক অতিথি ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করে এক সেনা কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ওই সেনা কর্মকর্তার হাতে থাকা একটি কালো ব্যাগে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের গোপন কোড সংরক্ষিত। পরে ওই পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয়।
কয়েকদিন আগে ট্রাম্পের টুইট অ্যাকাউন্ট যে মোবাইল ফোন থেকে চালানো হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে। ধারণা করা হয়, তিনি টুইটার চালাতে একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারাও ফোনে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নথি পড়েন। অথচ মোবাইল ফোন হ্যাক করাটা এখন অসাধ্য কিছু নয়। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজের সঙ্গে দেশের নিরাপত্তাও হুমকির মুখে ফেলছেন।
এর আগে গত সপ্তাহে ট্রাম্প আন্তঃসরকার গোপন তথ্য আদান-প্রদানে ব্যবহৃত একটি ব্যাগ অসুরক্ষিতভাবে ফেলে রেখেছিলেন। প্রেসিডেন্টের দফতরে তখন সাংবাদিকরা তার ছবি তুলছিলেন।
ডেমোক্র্যাটদের অভিযোগ, জাতীয় নিরাপত্তাসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রাম্প প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে।
সিনেটের গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড বিষয়ক কমিটির সদস্য জ্যেষ্ঠ সিনেটর রন ওয়াইডেন বলেন, ‘এটা মারাত্মক দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। ট্রাম্প নিজের ক্লাবে যে কাউকে অর্থের বিনিময়ে ছবি তুলতে দিচ্ছেন।’
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জোনাথন ওয়াকরো বলেন, ‘ট্রাম্প তার ডেস্কের মধ্যে থাকা সবকিছুর ছবি তুলতে দিচ্ছেন। আর এটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাকে মার্কিন গোপন তথ্য ফাঁসে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।’
মোবাইল নিরাপত্তা কোম্পানি লকআউট-এর ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক মারে বলেন, ‘একবার ভাবুন তো, ট্রাম্প বা তার সহযোগীরা মার-আ-লাগোতে গোপন বৈঠক করছেন, আর তাদের কারো মোবাইল ফোন ও তার মাইক্রোফোনের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে কোনও সাইবার হামলাকারীর হাতে!’
নিরাপত্তার প্রশ্নটি ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষেত্রে ভিন্ন কিছু নয়। প্রায় সব মার্কিন প্রশাসনের ক্ষেত্রেই নিরাপত্তার বিষয়টি প্রেসিডেন্ট ও তার সহকর্মীরা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন, তা এক বড় প্রশ্ন হিসেবে থেকেছে। তবে ট্রাম্পের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্যই তার ক্ষেত্রে বিষয়টি জোরে-শোরে সামনে আসছে।
এ প্রসঙ্গে মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের সাবেক সহকারি পরিচালক বিল পিকল বলেন, ‘সকল প্রেসিডেন্তের ক্ষেত্রেই এমন ভুল-ত্রুটি ঘটেছে। তবে আমরা হয়ত তাকে বেশি লক্ষ্য করছি। কারণ তিনি অন্যদের থেকে ভিন্ন।’
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন