সোমবার , ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

খোদা কি ওয়াস্তে হামে বাংলাদেশ বানা দো : পাকিস্তানি বুদ্ধিজীবীর আক্ষেপ (ভিডিও)

Paris
সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৮ ৯:৪৯ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনি্উজ ডেস্ক:

পাকিস্তানের নয়া প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার দেশে উন্নয়ন ঘটানোর জন্য ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছেন। তবে এজন্য তাকে বাংলাদেশের উন্নয়ন মডেল অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন পাকিস্তানি এক বুদ্ধিজীবী।

সম্প্রতি ইমরানের দল পিটিআইয়ের পক্ষে বলা হয়েছে- দুনিয়ার শীর্ষ উন্নত দেশ সুইডেনের মডেলে উন্নয়ন ঘটাবেন তিনি পাকিস্তানের। এমন দাবির জবাবে সম্প্রতি পাকিস্তানের ক্যাপিটাল টিভির আওয়াম নামের টক শোতে ইমরানকে দেশের উন্নয়নের জন্য সুইডেন বাদ দিয়ে আগে বাংলাদেশকে অনুসরণের পরামর্শ দেওয়া হয়।

এই পরামর্শ দেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট জাইঘাম খান। উর্দু ভাষার ওই টিভি শো’র ভিডিও ক্লিপ এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার ঝড় তুলেছে। এতে দেখা যায় জাইঘাম খান বাংলাদেশের উন্নয়নের ব্যাপক প্রশংসা করেন, তিনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের উদাহরণও দেন ইসলামাবাদ এক্সচেঞ্জের দুর্বল অবস্থান বোঝাতে।

‘আওয়াম’-এ বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা এবং একই সঙ্গে তাদের নিজেদের পিছিয়ে পড়ার জন্য আফসোস করতে দেখা গেছে আলোচকদের। বিশেষ করে জাইঘাম খানের বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ বেশ শেয়ার হচ্ছে বাংলাদেশে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মাঝে। তবে ভিডিওটি দেখে বিভিন্ন জন নিজের নিজের দৃষ্টিকোন থেকে মন্তব্য করছেন। অনেকেই খুব প্রশংসা করছেন পাকিস্তানি বুদ্ধিজীবীর ‘সত্য ভাষণের’ জন্য আবার কেউ কেউ বলছেন প্রকারান্তরে বাংলাদেশকে হেয় করার চেষ্টা করা হয়েছে।

উর্দু ভাষায় ধারণ করা ওই টকশোতে জাইঘাম খানের বাংলাদেশ বিষয়ক অংশটুকুর বাংলা ভাষান্তর এখানে কালের কণ্ঠের পাঠকদের জন্যে উপস্থাপন করা হলো-

আলোচনার বিষয়বস্ত ছিল নয়া প্রধানমন্ত্রী তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান ইমরান খানের দেওয়া উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি ও তার বাস্তবায়নে যৌক্তিকতা।

অনুষ্ঠানে জাইঘাম খানের বক্তব্যের একটি অংশ ছিল- দেখুন, পিটিআইয়ের সবচেয়ে সরলসিধা কথাটি এবং একইসঙ্গে যা তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র ছিল- তা হচ্ছে থিওরি অব চেঞ্জ অর্থাৎ পরিবর্তন তত্ত্ব। কোন তরিকায় পাকিস্তান বদলাবে?

আর এতে দুটি বিষয় আছে। তার পিলার হচ্ছে দুটি- এক নম্বরটি হচ্ছে এর নেতা। এমন নেতৃত্ব যা দুর্নীতিমুক্ত হবে। আর লিডারশিপের অর্থ হচ্ছে একজন মানুষ। দ্য ম্যান অ্যাট দ্য টপ। যা আমাদের পুরনো ইসলামি ধারায় আছে খলিফা পদ্ধতি। আর এই কথাটাও যে- যদি শাসক নেক (সদাচারী) হয় তবে  সমগ্র দেশে গরুও বেশি দুধ দেয়। আর যদি শাসক দুশ্চরিত্র হয় তবে তার দেশের গাধাও ধনসম্পদ লুটতে চায় আর গাইও দুধ দেয় না।

তো যে লোকটা শীর্ষে থাকবেন মানে ম্যান অ্যাট দ্য টপ- সেখানে আমাদের দরকার নেক, পাক আর ঈমানদার একজন মানুষ। আর দ্বিতীয় যে বিষয়টি ছিল তা হচ্ছে, পাকিস্তানের যা কিছু আছে তার সবই দুর্নীতিতে মগ্ন। দুর্নীতিমুক্ত হলেই দেশ ঠিক হয়ে যাবে! কিন্তু তা খুব সহজ কাজ নয়। আধুনিক রাষ্ট্র একটি জটিল বিষয়, আধুনিক সমাজও বেশ জটিল, আর আধুনিক অর্থনীতিও খুব জটিল একটি বিষয়।

আমাদের চেয়ে অনেক বেশি দুর্নীতিপ্রবণ দেশও উন্নতিতে আমাদের চেয়ে এখন অনেক এগিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ। আমি আগেও এ বিষয়ে বলেছি। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ইনডেক্সে একসময় আমাদের চেয়ে ২৪ ধাপ নিচে ছিল। কিন্তু এখন তারা এত উন্নতি করছে যে ইমরান খানের পিটিআই যদি পাকিস্তানের সবকিছু ঠিকও করে ফেলে তবু বাংলাদেশের সমকক্ষ হতেও আমাদের কমপক্ষে দশ বছর প্রয়োজন।

তাদের উন্নয়নের দ্রুতগতির দিকে দেখুন- ৭%। আর আমাদের ৫.৮% যা এখন নিম্নগামী। আপনারা শুধু তাদের স্টক এক্সচেঞ্জের দিকে তাকান- ঢাকা স্টক এক্সেঞ্জ যখন ৩০০ শত বিলিয়ন ডলার, তখন পাকিস্তানী স্টক এক্সেঞ্জ মাত্র ১০০ শত বিলিয়ন ডলার ৷

বাংলাদেশ যখন ৪০ বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট করে, পাকিস্তান তখন ২২ বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট করে ৷ আর তাদের বার্ষিক উন্নয়নের গতিও দ্রুততর। তবে আমরা যদি তাদের সমান গতিতে উন্নয়ন করতে থাকি, উন্নয়নের গতি বাড়াই… তাদের জিডিপি ৭%-এ আছে আর আমরা তাদের ছাড়িয়ে ৯%-১০% জিডিপি উন্নয়ন করে ফেলবো- এমনটা কিন্তু অসম্ভব।

তবে সেটা করতে গেলেও আমাদের ১০-১২ বছর লেগে যাবে শুধু বাংলাদেশের সমকক্ষ হতে। আর এদিকে গত পরশু আমাদের দেশের এক বড় পত্রিকার প্রথম পাতায় রিপোর্ট ছিল- সুইডেনের মডেল আনতে চাচ্ছে সরকার। যে তরিকায় সুইডেনে যা যা সব হয়- পিটিআই পাকিস্তানে সেসব করতে চাচ্ছে- এটা ছিল এক্সক্লুসিভ খবর।

আরে… আল্লাহর ওয়াস্তে আমাদের বাংলাদেশ বানিয়ে দাও। আমরা ইমরান খানের কাছে কৃতজ্ঞ হয়ে যাবো  ৫ বছর না, অন্ততঃপক্ষে দশ বছরেও যদি আমাদের বাংলাদেশের স্তরে নিয়ে যেতে পারেন তিনি। সেটাও হওয়ার নয়।

এসময় অপর আলোচক মন্তব্য করেন- সেই বাংলাদেশ যাকে আমরা কেটে বাদ দিয়েছি! যাদের নিয়ে তখন আমাদের পশ্চিম পাকিস্তানের কিছু ক্ষমতাবান লোক এমন বলতেন যে- ওরা আমাদের ওপর বোঝা হয়ে আছে এবং আমরা তাদের ছাড়াই উন্নতি করে ফেলবো।

তখন তিনি বলেন- একদম ঠিক বলেছেন।

https://www.facebook.com/zaigham.khan.9/videos/10215129561045215/?t=0

প্রসঙ্গত, জাইঘাম খানের ওই বক্তব্যের সূত্র ধরে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তিনি পাকিস্তানের উন্নয়নে সহায়তা করতে চান কি না?

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, কেন নয়! যদি তারা চায় আমরা অবশ্যই (উন্নয়নে) তাদের সাহায্য করবো। এসময় তিনি আরো বলেন, সেখানকার জনগণের কথা ভাবুন। ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে ভাববেন না, সেখানকার সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করুন।

শেখ হাসিনা বলেন, তাদের (পাকিস্তানের) কল্যাণে যে কোনো অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে আমার কোনো আপত্তি নেই।

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক

আপনার জন্য নির্বাচিত