আলোচিত তোশাখানা মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে কারবাসের সাজা দেওয়া অতিরিক্ত জেলা ও সেসন বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ারকে ওএসডি করেছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি)। আইএইচসির ‘নতুন একটি পদে’ তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
নতুন সেই পদের নাম এখনও জানা যায়নি। শনিবার আইএইচসির অতিরিক্ত রেজিস্টার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলা হয়, ‘আইএইচসির মাননীয় শীর্ষ বিচারপতির নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা ও সেশন জজ হুমায়ুন দিলাওয়ারকে হাইকোর্টের জুডিশিয়াল সার্ভিস সংক্রান্ত নতুন একটি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত শতকের সত্তরের দশকে পাকিস্তানের সরকারি একটি বিভাগ হিসেবে তোশাখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই বিভাগটি প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও অন্যান্য বিশিষ্ট জনদের দেওয়া উপহার জমা রাখে।
তোশাখানার নিয়ম অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা বা সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের পাওয়া সব উপহার অবশ্যই এই বিভাগে জমা দিতে হবে। যারা এসব উপহার পেয়েছেন তারা পরে এগুলো নামমাত্র মূল্যে কিনে নিতে পারবেন।
তোশাখানা থেকে কোনো উপহার কিনে নেওয়ার পর সেটি অন্য কারো কাছে বিক্রি করাকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় পাকিস্তানের আইনে।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে তোশাখানা বিতর্কের শুরু হয় ২০২১ সালে। ওই সময় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি রাষ্ট্রীয় তোশাখানা থেকে বিদেশিদের দেওয়া বিভিন্ন উপহার নামমাত্র মূল্যে কিনে নেন। পরে সেসব উপহার উচ্চ দামে করে দেন তারা।
এই অভিযোগে ইসলামাবাদের অতিরিক্ত জেলা ও সেশন আদালতে মামলা করে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। গত ৫ আগস্ট সেই মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ার।
রায়ের সংক্ষিপ্ত ঘোষণায় তিনি ইমরান খানকে ৩ বছর কারাবাসের সাজা এবং ১ লাখ রুপি জরিমানা ধার্য করেন।
তারপর গত ২৩ আগস্ট পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি ওমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের একটি বেঞ্চ মন্তব্য করেন— তোশাখানা মামলার রায়ে গুরুতর ত্রুটি ছিল এবং বিচারক খুবই তাড়াহুড়ো করে এই রায় ঘোষনা করেছেন।
সর্বোচ্চ আদালত এই মন্তব্য করার ৩ দিনের মধ্যে ওএসডি করা হলো বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ারকে।