সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
জামালপুরের প্রত্যন্ত চরে আটকে থাকা ভারতীয় বুনো হাতিটি উদ্ধারে চট্টগ্রাম থেকে আরেকটি পোষা হাতি এনেছেন বনকর্মীরা।
আশা করা হচ্ছিল, এই মেয়ে হাতিটি হয়তো বুনো পুরুষ হাতিটিকে বাগ মানাতে পারবে এবং কোন শুকনো জায়গায় নিয়ে আসতে পারবে। তখন সেটিকে অজ্ঞান করার ওষুধ দিতে পারবেন বনকর্মীরা।
তবে তাতে কাজ হয়নি। উল্টো রেগেমেগে সেই হাতিকে তাড়িয়ে দিয়েছে সে। বুনো হাতিটির কাছাকাছি যাওয়ার জন্য শনিবার চট্টগ্রাম থেকে একটি স্ত্রী হাতি নিয়ে আসা হয়।
শনিবার সেই হাতিটির পিঠে চড়েই তিনজন কর্মী সরিষাবাড়ির প্রত্যন্ত একটি চরে হাতিটির কাছাকাছি যান। একটি শুকনো জায়গায় নিয়ে আসার হাতিটিকে অজ্ঞান করার জন্য ওষুধের গুলি ছোড়েন কর্মকর্তারা। কিন্তু সেই গুলিটিও ফসকে বেরিয়ে যায়। এরপরই উল্টো বুনো হাতিটি রেগে এই পোষা হাতিটিকে তাড়া করে। ফলে এদিনের মতো কর্মকর্তারা সেটিকে বাগে আনার আর কোন চেষ্টা করতে পারেনি।
এরপর হাতিটি আরো বন্যা আক্রান্ত এলাকার দিকে চলে যায়, বলছেন, মি. চৌধুরী। রবিবার আবার হাতিটির পিছনে অভিযান শুরু করা হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গত কয়েকদিন ধরেই হাতিটিকে একটি শুকনো জায়গায় নিয়ে অজ্ঞান করার জন্য পিছনে ঘুরছে বাংলাদেশ ও ভারতের বন কর্মীদের একটি দল। কিন্তু বন্যা প্রবণ এলাকায় হাতিটি অবস্থান করায় সেরকম কোন সুযোগ পাওয়া যায়নি।
বন্য প্রাণী বিভাগের উপ বন সংরক্ষক শাহাবুদ্দিন এর আগে বলেছিলেন, শুকনো জায়গায় না আনা পর্যন্ত হাতিটিকে অজ্ঞান করা যাবেনা। কারণ পানিতে অজ্ঞান করা হলে সেটি আহত হতে পারে।
হাতিটি উদ্ধারে সহায়তা করতে ভারতের তিন সদস্যের একটি দল এখন জামালপুরে রয়েছে।
বিশাল দেহের প্রাণীটি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন চর এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
বন্য হাতিটি গত ২৮শে জুন ভারতের আসাম থেকে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায় প্রবেশ করে।
পরে সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা ও বগুড়ার চর ঘুরে হাতিটি এখন জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অবস্থান নিয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, বুনো হাতিটিকে ভারতে পাঠানো হবে, নাকি বাংলাদেশের কোন পার্কে রাখা হবে, সেটি ভারতীয় কর্মকর্তাদের আলোচনা এবং হাতিটির অবস্থা পর্যালোচনার পরে ঠিক করা হবে।
দিকে হাতিটি যেখানেই যাচ্ছে সেদিকেই ভিড় করছেন উৎসুক লোকজন। গণমাধ্যমের কর্মীরাও নিয়মিত হাতির গতিবিধির দিকে নজর রাখছেন। যখনই হাতিটি যেখানে গেছে সেখানে ছুটে গেছেন সাংবাদিক ও আলোকচিত্রীরা।
ভারত থেকে বাংলাদেশে হাতি আসার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগেও আরও দু’বার এরকম হাতি আসার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এভাবে দীর্ঘদিন ধরে একটি বুনো হাতি আটকে থাকার ঘটনা আগে দেখা যায়নি, বলছেন বন কর্মকর্তারা।
সুত্র: বিবিসি