সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে সব বাবা-মায়েরই মাথাব্যথার শেষ নেই। কিছু হলেই চিকিৎসকের কাছে ছুটে যান তারা। তবে সন্তানের মনের হাল নিয়ে তারা খুব একটা চর্চা করেন না। সেই দিকটা অবহেলিতই রয়ে যায়।
আর সেই অবহেলার ফাঁকে কিছু বাচ্চার ব্রেনের ভেতর ঢুকে ভয়, উৎকণ্ঠা, উদ্বেগ থেকে শুরু করে একাধিক সমস্যা।
সচেতনতার অভাবে এ বিষয়টি গোপনই থেকে যায়। তাই মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা ছোট থেকেই সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের পাঠ দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। এমনকি বাবা-মায়েদেরও ছোটদের মনের জগৎ সম্পর্কে জানতে বলছেন।
একমাত্র এই নিয়মটা মেনে চললেই সন্তানের সব মানসিক বাধা অনায়াসে চলে যাবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আজকের প্রতিবেদনে জানাব এমন কিছু টিপস। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
রুটিন তৈরি করুন
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, খুব ছোট বাচ্চাদের মনের স্বাস্থ্যের পাঠ দেওয়া সম্ভব নয়।
কিন্তু তাই বলে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। বরং একদম ছোট থেকেই, অর্থাৎ ৩-৪ বছর বয়স থেকেই তাদের কিছু পজিটিভ অভ্যাসে অভ্যস্ত করুন। তাদের বই পড়তে, আঁকতে, গান গাইতে শেখান। মাঠে খেলতে যেতে দিন, সকলের সঙ্গে মিশতে দিন। এ সব অভ্যাস তাদের মনকে ভালো রাখবে।
তারা জীবনের পথে খুব সহজেই এগিয়ে যাবে।
কোন বয়স থেকে মনের স্বাস্থ্যের পাঠ দিবেন
বাচ্চার বয়স ৮-৯ বছর হলেই তাদের মনের স্বাস্থ্যের পাঠ দেওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বয়স থেকেই অনেক শিশু সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার শুরু করে দেয়। সেখানে নানা ধরনের মন্তব্য ছোটদের মনের হাল বিগড়ে দিতে পারে। তাই বাবা-মা হিসেবে এই বয়স থেকেই সন্তানকে মনের স্বাস্থ্যের পাঠ দিন। তাকে বোঝান, বাঁচতে গেলে মন খারাপ হতে পারে, অনেকেই খারাপ বলতে পারে, ভয় লাগতে পারে, উৎকণ্ঠা হতে পারে। তবে এটা নিয়ে বেশি বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। একটু সময় দিলেই এসব সমস্যা নিজের থেকেই ঠিক হয়ে যায়। আর যদি নিজের থেকে ঠিক না হয়, তাহলে পরিবার, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে হবে।
মোবাইলের ব্যবহার কমাতে হবে
বর্তমান সময়ে বাচ্চাদের মধ্যে অধিকাংশই মোবাইলে আসক্ত। তারা মোবাইলে ভিডিও দেখে, গেম খেলে। এমনকি সারাদিন ব্যস্ত থাকে সামাজিক মাধ্যমে। আর ছোটদের এই মোবাইল প্রীতিই মনোসংযোগ নষ্ট করে দিচ্ছে। পড়াশোনায় আগ্রহ হারাচ্ছে, কৃত্রিম জগতে বাস করছে। তাই সন্তানকে খুব কম সময়ের জন্য মোবাইল ব্যবহার করতে দিন। এমনকি আপনারাও তাদের সামনে এই যন্ত্র কম ব্যবহার করুন। না হয় পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে।
যেসব লক্ষণে সাবধান হবেন
সন্তান খুব চুপচাপ হয়ে গিয়েছে
খালি কান্নাকাটি করছে
হঠাৎ করে ভয় পাচ্ছে
মা-বাবাকে ছাড়া একটুও থাকতে চাইছে না
বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছে না
পছন্দের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে
এই ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে সাবধান হোন। এগুলোর পিছনে উৎকণ্ঠা, অবসাদের মতো মানসিক সমস্যা থাকতে পারে। ঠিক সময়ে এর চিকিৎসা না হলে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
স্কুলেই দেওয়া হোক মনের স্বাস্থ্যের পাঠ
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাথমিক স্তর থেকেই মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টা স্কুল পাঠ্যে দেওয়া উচিত। তাহলে বাচ্চারা শরীরের মতোই মনের সমস্যাগুলো সম্পর্কে জানতে পারবে। খারাপ পরিস্থিতিতে বড়দের পরামর্শ নিতে পারবে।
সূত্র: কালের কণ্ঠ