পশ্চিম ইউরোপ আঘাত হেনেছে প্রবল শক্তিশালী ঝড় সিয়ারান। এতে অন্তত ১২ জন মারা গেছেন। লন্ডভন্ড হয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বাতিল হয়েছে বহু ফ্লাইট ও রেলওয়ের শিডিউল।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) ইতালীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঝড়ে টাসকানি অঞ্চলে কমপক্ষে পাঁচজন মারা গেছেন। ওই এলাকায় রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
টাসকানির গভর্নর ইউজেনিও জিয়ানি বলেছেন, নিহত পাঁচজনের মধ্যে ৮৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি রয়েছেন। তাকে মন্টেমুরলো শহরে নিজ বাড়ির নিচতলায় ডুবন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে ইউজেনিও লিখেছেন, আজ টাসকানিতে যা হয়েছে তার একটা নাম রয়েছে: জলবায়ু পরিবর্তন।
ফ্লোরেন্সের মেয়র দারিও নারদেলা বলেছেন, আর্নো নদীর জলস্তর ক্রমাগত বাড়তে থাকায় শহরের পরিস্থিতি গুরুতর। ইউরোপজুড়ে ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই প্রাণ হারিয়েছেন ঝড়ো বাতাসে ভেঙে বা উপড়ে পড়া গাছের নিচে চাপা পড়ে।
বেলজিয়ামের ঘেন্ট শহরে পাঁচ বছর বয়সী এক বালক এবং ৬৪ বছর বয়সী এক নারী ভাঙা ডালপালার নিচে পড়ে মারা গেছেন।
উত্তর ফ্রান্সের আইসনে অঞ্চলে গাছ পড়ে এক লরি চালকের মৃত্যু হয়েছে। বন্দর শহর লে হাভরে বাড়ির বারান্দা থেকে পড়ে আরও এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর জানিয়েছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া নেদারল্যান্ডসের ভেনরে শহরে এক পুরুষ, স্পেনে একজন নারী এবং জার্মানিতে এক পুরুষ মারা গেছেন।
ফ্রান্সের উত্তর-পশ্চিম উপকূলে ঝড়ের কারণে প্রায় ১২ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
যোগাযোগ বিপর্যয়
ঝড়টি বেলজিয়ামের রেল, বিমান এবং সামুদ্রিক যানবাহন চলাচল ব্যাহত করেছে। এর কারণে এন্টওয়ার্প বন্দর বন্ধ ছিল এবং ব্রাসেলস থেকে ফ্লাইটগুলোর উড্ডয়নও ব্যাহত হয়েছে।
ফরাসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটির উত্তর-পশ্চিম উপকূলের অগ্রভাগে পয়েন্টে ডু রাজে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২০৭ কিলোমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া বন্দর শহর ব্রেস্টে ঘণ্টায় ১৫৬ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে দেখা গেছে।
ঝড়ের কারণে ইংল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে শত শত স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমস্টারডামের শিফোল বিমানবন্দরে বাতিল করা হয়েছে ২০০টিরও বেশি ফ্লাইট।
স্পেনেও ১১টি বিমানবন্দরে ৮০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।