বাঘায় মৃত্যুর পর জমি রেজিস্ট্রি; দলিল লেখকসহ ৫ জন কারাগারে


বাঘা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাঘায় মৃত্যুর ৪০ দিন পর জমি রেজিস্ট্রির অভিযোগে দলিল লেখকসহ ৫ জনকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদলত। বুধবার (৩ আগষ্ট) রাজশাহী চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

তারা হলেন চারঘাট উপজেলার বাটিয়াকান্দি গ্রামে সাদেক মোল্লার ছেলে সাহাবুল মোল্লা, হেজাতুল্লাহর ছেলে রিপন আলী, বাঘা উপজেলার দিয়ার কাদিরপুর গ্রামের মৃত আকছেদ আলীর ছেলে বাঘা সাবরেজিষ্ট্রার অফিসের দলিল লেখক উম্মত আলী, আরেক দলিল লেখক আড়ানী ইউনিয়নের ঝিনা গ্রামের রাহাতুল্লার ছেলে আয়েজ উদ্দিন, সহকারী দলিল লেখক আড়ানী হামিদকুড়া গ্রামে মৃত মোজাহার হোসেনের ছেলে আলম হোসেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চারঘাটের বাসুদেবপুর গ্রামের খাজিম উদ্দিন মোল্লার আড়ানী বাজারের দক্ষিণ দিকে ৮ শতাংশ জমি রয়েছে। এই জমি তার মৃত্যুর ৪০ দিন পর ৪ শতাংশ জমি সাবরেজিষ্ট্রার অফিসের দলিল লেখকের মাধ্যমে ২০১৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রি করে নেয় সাহাবুল মোল্লা। কিন্তু খাজিম উদ্দিন মোল্লার মৃত্যু বরণ করেন ২০১৪ সালের ১৪ আগষ্ট। পরে এই জমি সাহাবুল মোল্লা বিক্রয় করেন আড়ানী পৌর বাজারের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী কমল কর্মকারের কাছে। এই জমি দখল করতে আসলে টের পান মৃত খাজিম উদ্দিন মোল্লার ছেলে জুলফিকার আলী ভুট্টু। জমি সংলগ্ন ভুট্টুর বাড়ি। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেন, তাঁর পিতার মৃত্যুর ৪০ দিন পর এই দলিল সম্পাদিত হয়েছে।

এই দলিলের সকল কাগজসহ এই বছরের ২২ ফেব্রুয়ারী গ্রহীতা, সনাক্তকারি, সাক্ষি, দলিল লেখকসহ ৫ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন জুলফিকার আলী ভুট্টু। ৩১ জুলাই এই মামলার ধার্য্য তারিখ ছিল। কিন্তু আসামীরা এ তারিখে আদালতে হাজিরা না দেয়ায় বিচারক তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়না জারি করেন। আসামীরা বুধবার আদালতে আত্ত্বসমর্পন করে জামিনের জন্য প্রার্থনা করলে ম্যাজিষ্ট্রেট তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে মামলার বাদি জুলফিকার আলী ভূট্ট বলেন, একটি জালিয়াতি চক্র আমার পিতার মৃত্যুর পর জমির জাল দলিল সম্পাদন করে নিয়েছেন। বিষয়টি অবগত হলে আদালতে মামলা দায়ের করি। সেই মামলায় ৫ জন আসামী আদালতে আত্ত্বসমর্পন করে জামিনের জন্য প্রার্থনা করলে ম্যাজিষ্ট্রেট তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে আড়ানী পৌর বাজারের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী অমল কর্মকার বলেন, জমির কাগজপত্র দেখে সাহাবুল মোল্লার কাছে থেকে জমি ক্রয় করেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে জমি ক্রয় করা সঠিক হয়েছে।

বাঘা সাবরেজিষ্ট্রার নকিবুল আলম বলেন, আমার যোগদানের আগের ঘটনা। তবে এ বিষয়ে কোন দলিল লেখক এর সাথে জড়িত থাকার প্রমান পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এস/আই