বর্তমানে কমবয়সীদের মধ্যেও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। এর পেছনে বিশেষজ্ঞরা অনিয়মিত জীবনযাপন ব্যবস্থাকেই বেশি দায়ী করছেন। জানেন কি, অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম, শরীরচর্চা, দুশ্চিন্তা এমনকি অসুখী সম্পর্কে জড়িত থাকার কারণেও হৃদরোগে ভুগতে হতে পারে।
হৃৎপিণ্ড একটি সূক্ষ্ম অঙ্গ, যা সংবহনতন্ত্রের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত ও অক্সিজেন পাম্প করে। রোগমুক্ত জীবনযাপনের জন্য হৃদযন্ত্রণে সুস্থ রাখা অত্যাবশ্যক। তার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারসহ নিয়মিত ব্যায়াম অপরিহার্য।
এই দুটি ছাড়াও আরও বেশ কিছু ক্রিয়াকলাপ, যা আশ্চর্যজনকভাবে আমাদের হৃদয়ের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। যদিও এগুলোকে সবাই সামান্য বলেই মনে করেন। তবে দীর্ঘমেয়াদে এসব কার্যকলাপ আপনার হৃদয়ের কার্যকারিতা কমাতে পারে। যা হৃদরোগের প্রবণতা আরও বাড়িয়ে দেয়। জেনে নিন কী কী-
>> সারাদিন অফিসের ডেস্কে বসে যারা যারা কাজ করেন কিংবা একই জায়গায় দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা হৃদরোগের ঝুঁকি দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, যারা পর্যাপ্ত নড়াচড়া করেন না বা প্রতিদিন পাঁচ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ধরে বসে থাকেন তাদের হার্টের অসুখ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। হার্টকে সুস্থ রাখতে প্রতি ঘণ্টায় পাঁচ মিনিট হাঁটার পরামর্শ দেওয়া হয়।
>> মুখের স্বাস্থ্যের সঙ্গে হৃদরোগের যোগসূত্র আছে। দাঁত বা মাড়ির প্রদাহের ফলে দাঁতের ক্ষয় দেখা দেয়। যা হার্ট ও কিডনির স্বাস্থ্যের প্রভাবে ফেলতে পারে। জার্নাল অব পিরিওডন্টাল রিসার্চে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ফ্লস করেন তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কম।
কারণ যে ব্যাকটেরিয়া মাড়ির সমস্যার দিকে পরিচালিত করে তা শরীরেও প্রদাহ বাড়াতে পারে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ে। ফ্লসিং মুখ থেকে লুকানো ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে।
>> একাকীত্ব মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যারও কারণ হতে পারে। একাকী ব্যক্তিদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। তাই একা থাকবেন না। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান। প্রয়োজনে প্রাণী পুষতে পারেন। এতেও একাকীত্ব কাটবে।
>> টক্সিক বা অসুখী সম্পর্কের মধ্যে যারা বসবাস করেন তাদের ক্ষেত্রে হার্টের অসুখ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এর কারণ হলো সম্পর্কে অসুখী হলে স্ট্রেসের মাত্রা বাড়ে।
ফলে আপনি অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস অনুসরণ করতে পাারে। অবশেষে দম্পতিদের হার্টের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। একটি সুখী ও তৃপ্তিপূর্ণ সম্পর্ক ব্যক্তিকে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ রাখে ও দীর্ঘায়ু করে।
>> হার্টের স্বাস্থ্যসহ সামগ্রিক সুস্থতার জন্য ব্যায়াম দুর্দান্ত। তবে দীর্ঘক্ষণ ধরে অত্যধিক ব্যায়াম করলে হার্টের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে। যা হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়ায়। খুব বেশি পরিশ্রম ও খুব দ্রুত কাজ করা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়ায়। তাই ধীরে ধীরে শরীরচর্চা করুন। ব্যায়াম করার সময় আপনার শরীরের কথা শুনুন।
>> খাবারে অতিরিক্ত লবণ যোগ করার অভ্যাস অনেকেরই আছে। এই অভ্যাস কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এমনকি প্রক্রিয়াজাত খাবার ও জাঙ্ক ফুড হার্টের বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। দৈনিক ৫ গ্রামের বেশি লবণ খেলে স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
সূত্রঃ জাগো নিউজ