ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং নাগরিক অধিকার সুরক্ষার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক একটি সিদ্ধান্ত দিলো ৩ জন মুসলিম-আমেরিকান যুবকের পক্ষে। নিজ ধর্মের লোকজনের বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরি করতে অপারগতা প্রকাশ করায় এই যুবকদের সন্ত্রাসী হিসেবে বিমান ভ্রমণে নিষিদ্ধদের তালিকায় উঠিয়েছিল এফবিআইয়ের এক কর্মকর্তা। এমনকি, তারা টিকিট কেটে এয়ারপোর্টে গিয়েও বিমানে উঠতে সক্ষম হননি। এমন অপমানজনক ও বিব্রতকর পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ঐ যুবকেরা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন ন্যায়-বিচার প্রত্যাশায়। মামলায় এমন কান্ডের জন্যে এফবিআইয়ের ঐ অফিসারকে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করার অনুমতি চান।
কারণ, ‘বিমানে বিপজ্জনক যাত্রী’ হিসেবে যে তালিকা রয়েছে সেখানে তাদের নাম থাকার কোনই কারণ নেই। তারা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে আন্তর্জাতিক অথবা অভ্যন্তরীণভাবে সন্ত্রাসী গোষ্ঠির সহযোগি নন এবং কোন ধরনের ক্রাইমেও কখনো লিপ্ত ছিলেন না। ১০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার জাস্টিস এ্যামি কোনি ব্যারেটের বেঞ্চে অনুষ্ঠিত বিস্তারিত শুনানী শেষে ৮-০ ভোটে তিন যুবকের পক্ষে রায় দিয়ে বলা হয় যে, তারা এফবিআইয়ের ঐ কর্মকর্তাগণের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করতে পারবেন। ১৯৯৩ সালের ‘দ্য রিলিজিয়াস ফ্রিডম রেস্টুরেশন এ্যাক্ট’ (the Religious Freedom Restoration Act (RFRA) আইন অনুযায়ী ফেডারেল সরকারের কেউই ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ করা হয়-এমন কোন কাজে লিপ্ত অথবা মদদদান করতে পারেন না। সে অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে তিনজন সম্মিলিতভাবে এফবিআইয়ের কর্মকর্তা/গণের নামোল্লেখ করে মোটা অংকের ক্ষতিপূরণ দাবিতে মামলার অনুমতি পেলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে মোহাম্মদ তানভির, জামিল আলজিবাহ এবং নাভিদ শিনওয়ারিকে ফেডারেল সরকারের ‘নো ফ্লাই’ তালিকায় উঠানো হয়। এ তালিকা শুরু হয়েছে ৯/১১ এ সন্ত্রাসী হামলার পর। সময়ে সময়ে সেখানে নতুন নাম যুক্ত করা হচ্ছে।
সর্বশেষ এ রায়ে ট্রাম্প প্রশাসনের মুসলিম বিদ্বেষমূলক আরেকটি আচরণের নিন্দা-উচ্চারিত হলো।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন আদালতে বেশ কটি রায় এসেছে এধরনের ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক আইন/আচরণের বিরুদ্ধে। আর এ রায় প্রদানের সময় বিচারপতিগণের মধ্যে অতি সম্প্রতি ট্রাম্পের নিয়োজিত এ্যামি কোনি ব্যারেটও ছিলেন।
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন