নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক)হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশ নিষিদ্ধসহ ১০ দফা দাবি উপস্থাপন করেছে রামেক ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। সেই সাথে নিজস্ব মিডিয়াকর্মীও চান (রামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
সোমবার দুপুরে রামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম রফিকুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে ১০ দফা দাবি জানান তারা।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হলো, হাসপাতালে একজন রোগির কাছে দুইজনের বেশি দর্শনার্থী যেতে না দেওয়া, দালালদের অবাধ প্রবেশ বন্ধ করা এবং হাসপাতালের ওয়ার্ডে ইন্টার্নদের সঙ্গে চিকিৎসকদেরও সার্বক্ষণিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ১০ দফা দাবির সবগুলোই যৌক্তিক বলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম রফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালকে চিকিৎসক ও রোগীবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। আর হাসপাতালের স্বার্থেই নিজস্ব মিডিয়াকর্মী প্রয়োজন। বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত না হলেও তা জনসংযোগ কর্মকর্তার মতোই হবে।
এদিকে, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেপরোয়া আচরণে গত কয়েক মাস ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছে রামেক হাসপাতালে। রোগীর স্বজনরা প্রায়ই অভিযোগ তুলছেন, হাসপাতালে রোগীদের আর সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না। এছাড়া ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। এসবের প্রতিবাদ করতে গেলেই বেপরোয়া ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোগির স্বজনদের পিটিয়ে আহত করে পুলিশে দিচ্ছেন। সম্প্রতি হাসপাতালে এমন দু’টি ঘটনা ঘটেছে।
গত ১৩ নভেম্বর রোববার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে রামেক হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী মারা যাওয়াকে কেন্দ্র করে রোগীর স্বজন ও ইন্টানী চিকিৎসদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় নিহত মহাসিনের দুই ছেলেকে মারধরে করে পুলিশে দেয় ইন্টার্নি ডাক্তাররা। এ ঘটনায় আহতরা হলেন, তারা হলেন, রফিকুল ইসলাম (৪০) ও আনারুল ইসলাম (৩০)। আর এ ঘটনায় মা রাহেলা বেগম (৬০)।
এর প্রতিবাদে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ রোববার থেকে রামেকের ইন্টার্নদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া সবগুলো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রোববার ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা। তা না হলে হাসপাতাল ঘেরাও এবং লাঠি মিছিলের হুমকি দিয়েছে রাজশাহীর সামাজিক অধিকার রক্ষায় কাজ করা এই সংগঠনটি।
এর আগে গত শুক্রবার দুপুরে (রামেক) ডা. কাইছার রহমান চৌধুরী অডিটরিয়ামে সন্ধানীর কেন্দ্রীয় ৩৬তম ষান্মাসিক সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্য দিতে গিয়ে দেশের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছিলেন,
‘অ্যাপ্রোন পরলে আগে সেবা, পরে রাজনীতি। মনে রাখতে হবে রোগীর সেবা করাই চিকিৎসকদের প্রথম দায়িত্ব। আর মানুষের সেবা করার মানসিকতা না থাকলে চিকিৎসা পেশায় আসার দরকার নেই। কারণ, মানুষকে সেবা করার মধ্য দিয়েই মানুষের মহত্ব ফুটে ওঠে। রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়াটাও কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
স/অ