প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের সাড়ে তিন বছরে খরচ হয়েছে মাত্র ৪শ ২০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ ৩৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এ হিসেবে বাকি দেড় বছরে খরচ হওয়ার কথা আরও প্রায় দেড়শ কোটি টাকা।
কিন্তু এ হিসেবে প্রকল্প শেষে থেকে যাচ্ছে প্রায় সাড়ে ৫শ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি না হওয়ার কারণে বাকি অর্থ দাতাকে ফেরত দিতে হবে। সে কারণে তড়িঘড়ি করে প্রকল্পের ধরন সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র আরও জানায়, প্রকল্পের মেয়াদে অর্থ খরচ করতে না পারলে দাতাগোষ্ঠীর মধ্যে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হবে। সে কারণে প্রকল্পের সব অর্থ ব্যয় করার জন্য ১১টি সিটি কর্পোরেশনের ৫০ হাজার বস্তির শিশুদের প্রকল্পের আওয়তায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে।
কিন্তু এসব শিশুদের প্রকল্পের আওতায় আনা হলেও দেড় বছর পরে তারা কোথায় পড়াশুনা করবে, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়া রস্ক গ্রাজুয়েট অর্থাৎ যারা আনন্দ স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পাস করে মূল ধারার শিক্ষাগ্রহণ করছে না, তাদের কারিগরি প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য পাইলট প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
এরই মধ্যে ৩০টি উপজেলার ১ হাজার ৫শ শিশুর জন্য ৬ মাসের ৩৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে ৬ মাসের প্রশিক্ষণ তিন মাসেই শেষ করা হয়েছে। প্রকল্প সংশোধন করে আরও ৯০টি উপজেলার ২৫ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করেছে বিশ্বব্যাংকের কাছে। প্রকল্পের অর্থ খরচ করার জন্যই এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে প্রকল্পের পরিচালকের দাবি, শিশুদের কর্মমুখী শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রকল্পের ধরন পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া নানা অনিয়মের কারণে ৫৮১টি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যেসব স্কুল চালু রয়েছে, তার মান নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘আসলে আমাদের এই প্রকল্পটির ডিজাইনে কিছুটা ভুল ছিল। ফলে, পরে প্রকল্পের ধরন পরিবর্তন করে টাকা ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে’।
কীভাবে ডিজাইন পরিবর্তন করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঝরে পড়া শিশুদের কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মমুখী করার জন্য বাংলাদেশ টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ড (বিটিইবি) অনুমোদিত ৬ মাসের ৩৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া ১১টি সিটি কর্পোরেশনের ৫০ হাজার শিশুকে প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। বিশ্বব্যাংক এতে সম্মতি দিয়েছে।’
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউনকে