সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
সিরিয়ার ঘৌটায় গত ৫ দিনের সহিসংতায় চার শতাধিক মানুষের নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি। এদিকে রুশ কূটনৈতিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, অস্ত্র বিরতি নিয়ে বৃহস্পতিবারের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে কোনও ঐকমত্য হয়নি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো খবর দিয়েছে, বৃষ্টির মতো করে সেখানে বোমা পড়ছে এখনও। বেসামরিক মানুষেরা তীব্রতর মানসিক বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
রাজধানী দামেস্কের পূর্ব উপকণ্ঠের ঘৌটায় চার লাখ মানুষের বসবাস। সেখানকার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বিদ্রোহীদের হাতে। রুশ বিমান বাহিনীর সহায়তায় সরকারি আসাদ বাহিনী গত ৫ দিন ধরে টানা সেখানে বোমা বর্ষণ করছে। বৃষ্টির মতো পড়ছে ক্ষেপণাস্ত্র ও মর্টার গোলা । বৃহস্পতিবারের সহিসংতায় ৪৮ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সবমিলে ৪ শতাধিক বেসামরিক মানুষ সংঘাতের বলি হয়েছে গত ৫ দিনে। সিরীয় বাহিনীর দাবি, তারা পূর্ব গৌতাকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে মুক্ত করতে লড়ছে। অপরদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস মঙ্গলবার বলেছেন, সিরিয়ার পূর্ব গৌতায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় তিনি ‘গভীরভাবে শঙ্কিত’। এরইমধ্যে বেসামরিক নাগরিক রক্ষাসহ মানবিক আইনের মূল নীতি সমুন্নত রাখতে সকল পক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছ জাতিসংঘ।
ঘৌটার এই ভয়াবহ বিপর্যয় রুখতে দেশটিতে মানবিক সহায়তা ও জরুরি ওষুধপত্র সরবরাহের জন্য বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব তোলা হয়। অস্থায়ী সদস্য সুইডেন ও কুয়েত এ প্রস্তাব উত্থাপন করে। এতে ৩০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতির দাবি জানানো হয়। তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সেই চুক্তির ব্যাপারে ঐকমত্য হয়নি। রুশ কূটনৈতিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়াই বাকিদের সঙ্গে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ৩০ দিনের জন্য প্রস্তাবিত অস্ত্র বিরতির খসড়ায় বলা ছিল, চুক্তির ৭২ ঘণ্টা থেকে এটি কার্যকর হবে। ১২৪৪ সম্প্রদায়ের ৬৫ লাখ মানুষের মানবিক প্রয়োজনের বিবেচনার কথা বলা হয়েছিল ওই প্রস্তাবে। তবে আইএস, আল কায়দা ও নুসরা ফ্রন্ট অস্ত্র বিরতির আওতায় পড়বে না বলে উল্লেখ ছিল ওই প্রস্তাবে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ঘৌটায় সক্রিয় হায়াত তাহরিরর আল শামস নামের এক গোষ্ঠীকে আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট দাবি করেন। তাদেরকেও অস্ত্র বিরতির আওতায় না নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তবে এ নিয়ে সমঝোতা হয়নি। তাই যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-ফ্রান্সের প্রবল আগ্রহ সত্ত্বেও এই প্রস্তাব পাস করা যায়নি রাশিয়ার ভেটো ক্ষমতার কারণে।
২০১৩ সাল থেকে এলাকাটি বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। রাজধানী দামেস্কের কাছে অবস্থিত এটিই সর্বশেষ এলাকা, যেটি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকাটির পুনদর্খল নিতে চলতি মাসের শুরুর দিকে অভিযান জোরালো করে সরকারি বাহিনী। এতে শত শত মানুষ হতাহত হয়। পরে বেসামরিকদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে এক বিরল অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয় দুই পক্ষ। কিন্তু রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে আবারও সেখানে অভিযান শুরু করে সরকারি বাহিনী।