রবিবার , ১৪ আগস্ট ২০১৬ | ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

নওগাঁয় এমপি পুত্রের বিরুদ্ধে ইজারা দেওয়া পুকুর দখলের অভিযোগ

Paris
আগস্ট ১৪, ২০১৬ ১:১৭ অপরাহ্ণ

নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁর মহাদেবপুরে প্রশাসনের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া পুকুর দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিমের ছেলে সাকলাইন মাহমুদের বিরুদ্ধে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ইজারাদার আব্দুস সামাদ। তবে সাকলাইন তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

 
গত শনিবার উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের আলতাদিঘী গ্রামে ঘটা এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ইউএনও এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিলেও পুলিশ রহস্যজনক নিরব ভূমিকা পালন করে।

 
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, রাইগাঁ ইউনিয়নের আলতাদিঘী গ্রামে ১৩ দশমিক ৫৩ একর (প্রায় ৪১ বিঘা) আয়তনের একটি পুকুর গত জুন মাসে ১ দশমিক ২৮ একর জমির সহ-অংশীদার হিসেবে আলতাদিঘী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সামাদকে ইজারা দেওয়া হয়। গত চার মাস ধরে তিনি সেখানে মাছ চাষ করে আসছিলেন।

 

গত শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীয় সাংসদ সেলিম তরফদারের ছেলে সাকলাইনের নির্দেশে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত প্রায় ২০০ জন সন্ত্রাসী পুকুর দখল করে মাছ মারতে শুরু করে। তাঁরা পুকুর পাহাড়া দেওয়ার জন্য শ্রমিকদের থাকার ঘর ভাংচুর করে এবং মাছের খাদ্যের গোডাউনে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেন।

এ ব্যাপারে ইজারাদার আব্দুস সালামের পক্ষে তাঁর ভাগনে মোজাফফর হোসেন শনিবার ইউএনও এর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। ইউএনও তাৎক্ষণিকভাবে মাছ মারা বন্ধের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। পুলিশ নির্দেশ পাওয়া সত্ত্বেও মাছ মারা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

শনিবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠি ও রড নিয়ে পাহাড়া দিতে প্রায় দেড়শ সন্ত্রাসীকে সেখানে দেখতে পাওয়া যায়। তখনও পুকুরের পূর্ব পাশে শ্রমিকদের থাকার ঘর ও মাছের খাদ্য গোডাউনে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। তখন পর্যন্ত পুলিশকে ঘটনাস্থলে যেতে দেখা যাইনি।
আব্দুস সামাদ সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘মোট ১২ লাখ ৬৫ হাজার ৮২৭ টাকা মূল্যে তিন বছরের জন্য মহিষবাথান উত্তরপাড়া সমবায় সমিতির নামে পুকুরটি ইজারা দেওয়া হয়। নিয়ম অনুসারে প্রথম বছরের জন্য নির্ধারিত ৪ লাখ ২১ হাজার ৯৪৪ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। ওই মাসেই আমদেরকে পুকুরটির দখল বুঝে দেওয়া হয়। দখল বুঝে পাওয়ার পর পুকুরে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মাছের পোনা ছাড়া হয়েছিল। চার মাসে সেগুলোর আনুমানিক মূল্য ৫০ লাখ টাকা হয়েছিল। সন্ত্রাসীরা সব মাছ লুট করে নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পুকুর রক্ষা দূরের কথা, আমরা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এমপির ছেলে গায়ের জোরে ইজারা দেওয়া পুকুর দখলে নিয়েছে। তাঁর গুন্ডারা নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, তাতে আমরা এখন আতংকিত।’

আব্দুল হামিদ, মোহাম্মদ আহমদ, জহুরুল ইসলাম সহ সাত-আটজন গ্রামবাসী জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে লাঠি, দা, রড ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রায় ২০০ জন্য সন্ত্রাসী আলতাদিঘীর চারপাশে অবস্থান নেন। তাঁরা গ্রামবাসীকে জিম্মি করে রাখে। গ্রামের লোকজন ভয়ে তাদেরকে বাধা দেওয়ার সাহস পায়নি। সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত লুটপাট চালালেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংসদ সেলিম তরফদারের ছেলে সাকলাইন মাহমুদ এ ব্যাপারে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানান। তিনি বলেন, ‘সমিতির অংশীদারদের মধ্যে পুকুরটি নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। আব্দুস সামাদ সমিতির নামে পুকুরটি ইজারা নিলেও সমিতির অন্য সদস্যদের সে বঞ্চিত করে আসছিল। শনিবার ওই সমিতির বঞ্চিত লোকজনই পুকুর দখলে নিতে যায়। এ ব্যপারে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমার ব্যাপারে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’

মহাদেবপুর থানার ওসি সাবের রেজা চৌধুরী বলেন, ‘কারা পুকুর দখল করতে গিয়েছে, সে ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। তবে মাছ মারার ব্যাপারে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করলেও থানায় এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ আসেনি। প্রশাসনের কাছে করা অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। তবে ইউএনও কোনো ম্যাজিস্ট্রেটকে সেখানে পাঠালে এবং তখন পুলিশের সহযোগিতা চাইলে পুলিশ সেখানে যেত।’

 
এ ব্যাপারে ইউএনও জেবুননাহার সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘জোর করে মাছ মারার ব্যাপারে একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। পুলিশকে তাৎক্ষনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওসিকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। এখন ওসি কি ব্যবস্থা নিল সেটি তাঁর দায়িত্ব।তবে পুকুরটি প্রশাসন থেকে ইজারা দেওয়া হয়েছে এবং এর টাকাও পাওয়া গেছে।’

 
এ ব্যাপারে মন্তব্যে জানার জন্য সাংসদ সেলিম তরফদারের ফোনে বারবার যোগাযোগ করেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
স/শ

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর