শনিবার , ২২ এপ্রিল ২০১৭ | ১২ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

নাচোলে দুবার হাতবদল হলো ১১ বিঘা শিকস্তি সম্পত্তি

Paris
এপ্রিল ২২, ২০১৭ ৬:৫৮ অপরাহ্ণ

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে আড়াই বছরের ব্যবধানে দুই-দুইবার ১১ বিঘা শিকস্তি সম্পত্তি হাতবদলের ঘটনা ঘটেছে। আইন অনুযায়ী শিকস্তি সম্পত্তি কোনোরকম হস্তান্তর বা বিক্রির বিধান না থাকলেও দুবারই জালিয়াতির মাধ্যমে ওই সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। আর এই জালিয়াতি ঘটেছে দাতা-গ্রহীতা ও দলিল লেখকদের যোগসাজশে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, নাচোল উপজেলার দিয়াড় গ্রামে (মহানন্দা নদীর তীরবর্তী গ্রাম) খলসী মৌজার ৩৮২ নং খতিয়ানের ২১৩, ৩৮২ ও ৪৫৬ নং দাগের মোট ১১ বিঘা (৩ দশমিক ৬৭ একর) জমি ১৯৭২ সালের আরএস রেকর্ডে শিকস্তি জমি হিসেবে গোমস্তাপুর উপজেলার নওয়াদিয়াড়ী গ্রামের মৃত আমিরুল্যা মণ্ডলের ছেলে মহিরুদ্দিন মণ্ডলের নামে উল্লেখ রয়েছে। শিকস্তি সম্পত্তি হস্তান্তর বা বিক্রির বিধান না থাকলেও ২০১৪ সালে এই সম্পত্তি জালিয়াতির উদ্দেশ্যে গোমস্তাপুর উপজেলার নওয়াদিয়াড়ী গ্রামের মৃত সাতকড়ি মণ্ডলের ছেলে জহিরুল ইসলাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ মসজিদপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম মণ্ডলের ছেলে আব্দুর রহিম মণ্ডল নিজেদের মহিরুদ্দিন মণ্ডলের প্রকৃত ওয়ারিশ দাবি করে একটি আমমোক্তারনামা দলিল সৃষ্টি করেন।

 

২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জালিয়াত চক্র সুকৌশলে সরকারি রেকর্ডে উল্লিখিত জমির শ্রেণী ‘শিকস্তি’র স্থানে ‘ধানি’ দেখিয়ে এই রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করে। দলিল লেখক ছিলেন বাদশা ফাহাদ, যার লাইসেন্স নং ১৯৩। সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন কেরামত আলী হাওলাদার। আমমোক্তারনামা দলিল মূলে ওই জমির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি লাভ করেন জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের সাজ্জাদ মণ্ডলের ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন ও একই গ্রামের মৃত কালুমুদ্দিনের ছেলে টুনু আলী। পরবর্তীতে মোয়াজ্জেম হোসেন ও টুনু আলী ওই সম্পত্তি সম্পূণরুপে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে আবারাও জালিয়াতির আশ্রয় নেন। প্রথমবার আমমোক্তারনামা দলিল করা হলেও এবার হয়েছে কবলা, যার অর্থ সম্পত্তি বিক্রি করা হয়েছে।

 

চলতি বছরের ১৩ মার্চ নাচোল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আবারও জমির শ্রেণী পরিবর্তন দেখিয়ে এই রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করা হয়। দলিল নং ১১৭৪/১৭। যেখানে ১১ বিঘা শিকস্তি সম্পত্তির মূল্য দেখানো হয়েছে ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা। দলিলে গ্রহীতা হিসেবে দাতা মোয়াজ্জেম হোসেন ও টুনু আলীর স্ত্রী যথাক্রমে নাজনীন বেগম ও নূরজাহান বেগমকে দেখানো হয়। দলিল লেখক ছিলেন গোলাম মোস্তফা, যার লাইসেন্স নং ৩২। সরকারি রেকর্ড এতটাই সূক্ষ্মভাবে পরিবর্তন করেছে জালিয়াত চক্র, যা খালি চোখে দেখে বোঝার উপায় নেই।
এ জালিয়াতির বিষয়ে নাচোল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার বসু প্রদীপের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমরা এ ব্যাপারে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি এবং তার ভিত্তিতে দলিলটি জব্দ করা হয়েছে। ‘কীভাবে সরকারি রেকর্ডে উল্লিখিত জমির শ্রেণীর ধরন পরিবর্তন করে দলিল রেজিস্ট্র হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘জালিয়াত চক্র এতটাই সূক্ষ্মভাবে পরিবর্তন করেছে যে, তা দেখে বোঝার উপায় নেই।

 

তাছাড়া উপজেলা পর্যায়ে সরকারি রেকর্ড সরাসরি যাচাই করার সুযোগ না থাকার দরুন এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। যদি প্রত্যেক রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল রেজিস্ট্রির আগে সরকারি রেকর্ড যাচাই করার সুযোগ থাকত তাহলে জালিয়াতির ঘটনা ঘটত না বললেই চলে। তাছাড়া কোনো দলিল নিয়ে সন্দেহ হলে আমরা সরকারি রেকর্ড দেখার জন্য জেলা অফিসে মেসেঞ্জার পাঠায়; কিন্তু সেই মেসেঞ্জারও জেলা অফিস পৌঁছার আগে জালিয়াত চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছে কিনা তা নিশ্চিত করে বলে যায় না। তারা এসে যা বলে, সেটাই বিশ্বাস করতে হয়।

স/অ

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর