সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরুর আগে শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমালা হ্যারিস। জনমত জরিপগুলো এবারের নির্বাচনে ঐতিহাসিক হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিয়েছে।
কমালা হ্যারিসের প্রচার দলের সূত্র বলছে মিজ হ্যারিস বুঝতে পারছেন যে তুমুল লড়াই হবে কিন্তু তিনি সত্যিকার অর্থেই ‘উদ্দীপ্ত ও উদ্যমী আছেন’। তার সমর্থকরা শেষ সমাবেশে যোগ দিতে এখন ফিলাডেলফিয়াতে সমবেত হচ্ছেন।
অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার শেষ সমাবেশ করতে এখন মিশিগানের গ্র্যান্ড র্যাপিডসের সমাবেশস্থলেই রয়েছেন। মি. ট্রাম্প তার আগের দুটি নির্বাচনের শেষ সমাবেশও এখানেই করেছিলেন। তবে সেখানে ২০১৬ সালে তিনি জিতলেও পরের নির্বাচনে জয় চলে যায় জো বাইডেনের দিকে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্বাচনের আগাম ভোট দেয়ার সংখ্যা ৮ কোটি পেরিয়েছে। এর মধ্যে ৪ কোটি ৪০ লাখের বেশি ভোটার ভোটকেন্দ্র গিয়ে আর প্রায় ৩ কোটি ৭ লাখ ভোটার ডাকযোগে ভোট দিয়েছেন।
নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত যিনি জয়ী হবেন তিনি হবেন দেশটির ৪৭তম প্রেসিডেন্ট।
পেনসিলভানিয়ার অভিবাসীরা যা বলছেন
পেনসিলভানিয়ার আলেনটাউন থেকে বিবিসির ব্রেন্ড ডেবুসম্যান জুনিয়র জানাচ্ছেন যে ওই এলাকার অবৈধ জনগোষ্ঠী রাজনৈতিকভাবে খুবই সক্রিয়।
অনেকেই বলেছেন তারা তাদের কমিউনিটির মধ্যে যারা ভোটার তাদের ভোট দিতে উৎসাহিত করছেন। কারণ নির্বাচনটি তাদের ও তাদের ভবিষ্যতের ওপর প্রভাব ফেলবে।
মেক্সিকোর বংশোদ্ভূত ৩৮ বছর বয়সী আরমান্দো জিমিনেজ গত ৩২ বছর ধরে সেখানে বসবাস করছেন। তিনি একটি গ্রুপের হয়ে কাজ করেছেন যেই গ্রুপটি এগারো হাজার ভোটার নিবন্ধনের দাবি করেছে।
“নাগরিকত্বের মতো বিষয়গুলোর জন্য আমাদের মানুষের ভোট দেয়া উচিত। আমরা চাই আমাদের স্থানীয় অফিসগুলো সবার প্রতিনিধিত্ব করুক,” বলছিলেন তিনি।
“এখানে আমার মতো আরও অনেকে আছে যারা ত্রিশ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে বাস করছে। আমরা চলে যাচ্ছি না, এটাই আমার বাড়ি।”
ট্রাম্প ও হ্যারিস যা বললেন
মিশিগান যাওয়ার আগে পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গের সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটারদের উদ্দেশে বলেছেন তারা যদি কমালা হ্যারিসকে ভোট দেয় তাহলে তাদের জন্য আগামী চার বছর হবে দুর্ভোগ, ব্যর্থতা ও বিপর্যয়ের, যা দেশ কখনোই কাটিয়ে উঠতে পারবে না।
“আমেরিকানদের প্রতি আমার বার্তা খুবই সাধারণ: ‘আমরা এভাবে বাস করতে পারি না”। তিনি মিজ হ্যারিসকে ‘একটি বিপর্যয়’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
“আপনাদের ভোট দেশের প্রতিটি সমস্যার সমাধান করতে পারে এবং গৌরবের নতুন উচ্চতার দিকে নিয়ে যেতে পারে”।
তিনি নির্বাচনের জর্জিয়ার ব্যালটের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনার প্রশংসা করেছেন। সোমবার জর্জিয়ার সুপ্রিম কোর্ট তিন হাজার ভোটারের ভোটের সময় বাড়িয়েছে। কারণ দাপ্তরিক ত্রুটির জন্য তারা সময়মত ব্যালট পাননি।
জর্জিয়া দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর একটি। জো বাইডেন ২০২০ সালের নির্বাচনে সেখানে বারো হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন।
অন্যদিকে আলেনটাউনের সমাবেশে কমালা হ্যারিস বলেছেন, “আমেরিকা নতুনভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্যও প্রস্তুত, যেখানে কোনো আমেরিকান একজন আরেকজনকে শত্রু হিসেবে নয়, প্রতিবেশী হিসেবে দেখবে।”
আইওয়া কেন দৃষ্টি আকর্ষণ করছে
বিবিসি সংবাদদাতা মাইক ওয়েন্ডলিং লিখেছেন যে শনিবার একটি জরিপের ফল তার দৃষ্টিতে এসেছে।সেলজার অ্যান্ড কো.- এর ওই জরিপ অনুযায়ী আইওয়াতে কমালা হ্যারিস তিন পয়েন্টের ব্যবধানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন। ৮০৮ জন ভোটারের ওপর জরিপটি চালানো হয়েছে। এতে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ পর্যন্ত ভুল থাকতে পারে।
তবে দুটি কারণে এ জরিপের ফল অনেকের কাছে বিস্ময়কর। প্রথমত ডোনাল্ড ট্রাম্প তার আগের দুটি নির্বাচনে এখানে সহজেই জিতেছিলেন। যে কারণে এটি সুইং স্টেটও বলা যায় না।
সেলজার অ্যান্ড কো. এর জরিপকে মোটামুটি সঠিক বলেই সবসময় মনে করা হয়।
আইওয়াতে ইলেক্টোরাল ভোট আছে ছয়টি।তবে ট্রাম্পের জন্য উদ্বেগের বিষয় হলো যে মিজ হ্যারিস নারী ও স্বাধীন ভোটারদের মধ্যে ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছেন। এটি সারাদেশেরই দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত হতে পারে।
অবশ্য ট্রাম্পের প্রচার দল ওই জরিপকে ভুল বলে উড়িয়ে দিয়েছে।সূত্র: বিবিসি বাংলা