রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর কাটাখালি পৌরসভার কাপাশিয়া এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে সংঘর্ষের পর মাইক্রোবাসে অগ্নিকাণ্ডে ১৭ জন নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে।

শুক্রবার রাতে কেটিসি হানিফ বাসের চালককে আসামি করে মামলা করেছে কাটাখালী থানার পুলিশ। এ মামলায় ওই বাসচালককে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

শনিবার সকালে রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শুক্রবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের কাপাশিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আরএমপির মুখপাত্র এডিসি গোলাম রুহুল কুদ্দুশ ও রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আব্দুর রোউফসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে হানিফ কেটিসি পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকায় যাচ্ছিল। রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে একটি হায়েস মাইক্রোবাস যাচ্ছিল রাজশাহীর দিকে।

দুপুর পৌনে ২টার দিকে কাটাখালী থানার সামনে মাইক্রোবাসটি একটি ট্রাককে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় যাত্রীবাহী বাসটির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। মুহূর্তেই মাইক্রোবাসে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে।

কয়েক মিনিটের মধ্যেই মাইক্রোটি পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে যায়। খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর তিনটি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও একজন ছাড়া কাউকে জীবিত উদ্ধার করা যায়নি। মাইক্রোবাসটিতে চালকসহ মোট ১৮ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে ১৭ জনই মারা গেছেন।

নিহতরা হলেন- রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের মহজিদপুর গ্রামের ফুল মিয়া (৪০), তার স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫), ছেলে ফয়সাল মিয়া (১৫), মেয়ে সুমাইয়া (৭) ও ছোট মেয়ে সাজিদা (৩) ; একই ইউনিয়নের দুরামিঠিপুর গ্রামের সাইদুর রহমান (৪৫), চৈত্রকোল ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি গ্রামের ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন (৩৯), তার স্ত্রী শামছুন্নাহার (৩২), শ্যালিকা কামরুন্নাহার বেগম (২৫), ছেলে সাজিদ (১০) ও মেয়ে সাবাহ খাতুন (৩); পীরগঞ্জ পৌরসভার প্রজাপাড়ার মোটরসাইকেল মেকার তাজুল ইসলাম ভুট্টো (৪০), তার স্ত্রী মুক্তা বেগম (৩৫), ছেলে ৮ম শ্রেণির ছাত্র ইয়ামিন (১৪); রায়পুর ইউনিয়নের দ্বাড়িকাপাড়া গ্রামের মোকলেছার রহমান (৪০), তার স্ত্রী পারভীন বেগম (৩৫), ছেলে পাভেল মিয়া (১৮)।

মাইক্রোবাস চালক পীরগঞ্জ  পৌরসভার পঁচাকান্দর গ্রামের হানিফ মিয়া ওরফে পঁচা (৩০) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

অন্যদিকে হানিফ পরিবহনের বাসটি মহাসড়কের উল্টো দিকে গিয়ে খাদে পড়ে যায়। সেখান থেকেও ৯ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। আরএমপি পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, মাইক্রোবাস ও হানিফ পরিবহনের বাসটি ১৩০ কিলোমিটার গতিতে চলছিল। মাইক্রোর আগুনে লেগুনাটিও ভস্মীভূত হয়। তবে সেখানে কোনো যাত্রী বা চালক ছিলেন না।