চাঁপাইনবাবগঞ্জে ফের দেখা মিলল ‘কালো দোচরা’র


নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘কালো দোচরা’। এটি একটি বিরল প্রজাতির পাখি। পাখিটি মূলত কালো রঙের। কিন্তু এই কালোর মধ্যেও যেন সৌন্দর্যে ভরা আপাদমস্তক। পাখিটির সৌন্দর্য দেখে যে কেউ মুগ্ধ হবে। এই সুন্দর পাখিটির ইংরেজি নাম রেড ন্যাপেড ইবিস।

এর বৈজ্ঞানিক নাম। এই পাখি ‘কালো কাস্তেচরা’ নামেও পরিচিত। গত ১২ ফেব্রুয়ারি এই পাখিটির দেখা মিলে চাঁপাইনাববঞ্জের পদ্মা তীরবর্তি এলাকা বাখের আলী বিলে। রাজশাহীর পাখিপ্রেমী অনিক মাহমুদ ইমনের ক্যামেরায় ধরা পড়ে পাখিটি। পরে তিনি সেই ছবি সরবরাহ করেন।

‘কালো দোচরা’ পাখিরা সাধারণত উপকূলীয় অঞ্চলের মিঠা পানির অগভীর জলাশয়ে কিংবা মোহনাতে বিচরণ করে। বিশেষ করে জলজ উদ্ভিদ অথবা কৃষি জমিতে একাকি, জোড়া জো, কিংবা ছোট ছোট দল হয়ে ঘুরে বেড়ায়। ঘন উদ্ভিদ সমৃদ্ধ জলাশয় এড়িয়ে চলে এরা। এই পাখির বাস বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস ও থাইল্যান্ড পর্যন্ত। বিশ্বে এদের অবস্থান তেমন বিস্তার লাভ করেনি। আমাদের দেশে পঞ্চগড়ে মাঝে মধ্যেই পাখিটির দেখা মিললেও গত দুই বছর ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেখা মিলছে। পাখিপ্রেমী মুহাম্মদ তারিক হাসানের ক্যামেরায় ধরা পড়েছিলো গত বছরের শীতে। এবার সেই প্রজাতির পাখির আবারো চাঁপাইনবাবগঞ্জেই দেখা পান অনিক মাহমুদ ইমন।

তিনি জানান, সাধারণত কৃষকের বন্ধু হিসেবে পরিচিত পাখি ‘কালো দোচরা’। ভারিক্কি চালে পা ফেলে ক্ষেত খামার চষে বেড়ায়। ক্ষেতের ক্ষতিকর পোকামাকড়, ইঁদুর ইত্যাদি খেয়ে কৃষকের উপকার করে। দেশে পরিযায়ী হয়ে আসে এরা। আকারে বেশ বড়োসড়ো। দেখতেও চমৎকার এবং শান্ত স্বভাবের। কণ্ঠস্বর অনেকটা কর্কশ। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় তেমন তফাৎ নেই। এই পাখির মাথার উপর আঁচিল ও লাল প্যাঁচ রয়েছে। কাঁধে সাদা প্যাঁচের সঙ্গে গাঢ় বাদামি। পিঠ বাদামি। ডানা ও লেজ নীল-সবুজের সঙ্গে কালোর মিশ্রণ। লেজ খাটো। দেহতল খয়েরি-বাদামি। ঠোঁট নিচের দিকে কাস্তের মতো বাঁকানো। লম্বা পা লালচে গোলাপি। অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে রঙে সামান্য তফাৎ রয়েছে।

পাখিপ্রেমী অনিক মাহমুদ বলেন, ‘কালো দোচরা’ পাখি বাংলাদেশে তেমন দেখা মিলে না। আর রাজশাহী অঞ্চলে গত বছর থেকে দেখা মিলছে। এর মধ্যে চাঁপাইনবাগঞ্জেই পর পর দুই বছর দেখা পাওয়া গেলো। তবে পঁঞ্চগড় এলাকায় মাঝে মাঝে দেখা মিলে।’

স/আর