ভালো দাম পেয়ে খুশি দুর্গাপুরের মরিচ চাষিরা

গোলাম রসুল, দুর্গাপুর:

দুর্গাপুরে দাম ভাল পাওয়ায় এবার খুশি মরিচ চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও চাষ কৌশলের কারণে এ বছর মরিচের বাম্পার ফলনও পেয়েছেন চাষিরা। অল্প পরিমাণ জমিতে মরিচ চাষ করেও লাখ টাকা ঘরে তুলতে পারছেন চাষিরা।
গত কয়েক বছর ধরে দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মরিচ চাষ করে বদলে গেছে অনেক কৃষকের ভাগ্য। উপজেলার আলীপুর, কানপাড়া, আমগাছি, বহরমপুর, সিংগাসহ বেশ কিছু গ্রামে মরিচ চাষের ব্যাপক হরে প্রসার ঘটছে। তবে মরিচের মড়ক রোগের কারণে কৃষকরা মরিচ চাষে আগ্রহী না হলেও বিগত কয়েক বছর থেকে বদলে গেছে দৃশ্যপট।

durantablog_1341206317_1-chilli-pepper-grafted-collection-plants-pack-of-300x300-285x285

কৃষি বিভাগের পরামর্শে নিত্যনতুন চাষ কৌশল আর ওষুধ প্রয়োগ করে মরিচের ভালো ফলন হওয়ায় এখন মরিচ চাষে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। সরেজমিনে উপজেলা কয়েকটি গ্রামে ঘুরে দেখা যায় দিগন্ত মাঠে মাঠে এখন মরিচের ক্ষেত। মরিচ ক্ষেতের পরিচর্যা ও গাছ থেকে মরিচ তোলায় ব্যস্থ হয়ে পড়েছেন নারী ও পুরুষ দিন মজুররা।

 

উপজেলা কানপাড়া গ্রামের মরিচ চাষী রফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর তিনি ৩ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন গত এক সপ্তাহে তিনি এই পর্যন্ত ১০ মণ মরিচ বাজারে বিক্রি করেছেন। যা থেকে তিনি পেয়েছেন প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। খরচ পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকার মতো। বর্তমান বাজার অব্যাহত থাকলে ও মরিচের গাছগুলো ভালো থাকলে আরো এক থেকে দেড় লক্ষ টার মরিচ বিক্রির আশা করছেন তিনি।

chilli1438770101 images

বহরমপুর গ্রামের কলিমুদ্দিন সিল্কসিটি নিউজকে জানান,  তিনি দেড় বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। তিনি গত ১৫ থেকে ২০দিন যাবত মরিচ বিক্রি করছেন। পথম কয়েতদিন দাম ভালো না পেলেও গত এক সপ্তাহ থেকে মরিচে দাম ভাল পাওয়া তিনি মহা খুশি। তিনি গত এক সপ্তাহে  ১৫ হাজার টাকা মরিচ বিক্রি করেছেন।

 

তারা আরো জানান, বর্তমানে বিভিন্ন হাটে বাজারে পাইকাড়ী মরিচ সাড়ে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।

index42

গগনবাড়িয়া গ্রামের মরিচ চাষি মসলেম আলী জানান, ক্ষেতের ৫ কিলোমিটার দূরে দুর্গাপুর বাজার। আর সেখানে মরিচ বিক্রির সুবিধা ছাড়াও ঢাকার পাইকাররাও এখান থেকে মরিচ কিনে নিয়ে যান। কাজেই বাজারজাত করার কোনো সমস্যা নেই। মরিচ ক্ষেতে ঠিকমতো ওষুধ প্রয়োগ না করলে পোকার উৎপাত আর মড়ক বেশি হয়। তবে মরিচের মড়ক প্রতিরোধে আরো কার্যকর ওষুধ ও পরামর্শ পাওয়া গেলে মরিচ চাষিরা মরিচ চাষে আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে। এই উপজেলায় মরিচের আবাদ সম্প্রসারণের কারণে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে উপজেলার শতশত নারী পুরুষের।

 

দিনমজুর সালতি বেগম জানান, গত ২ মাস ধরে তারা মরিচ ক্ষেতে একটানা কাজ করছেন। এখন মরিচ তুলছেন প্রতি কেজী ৩ টাকা দরে। এতে দৈনিক ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা আয় করছেন তারা।

 

উপজেলা কৃষি সম্পসারণ অফিস সূত্র সিল্কসিটি নিউজকে জানায়, এ বছর দুর্গাপুর উপজেলা জুড়ে ১৬০হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. বিমল কুমার প্রামানিক বলেন, অল্প জমিতে পরিচর্যা করে মরিচ ক্ষেত থেকে অধিক লাভ করা যায় বলে অনেকেই ঝুঁকে পড়ছেন মরিচ চাষে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে মরিচের আবাদ করায় এবং সাফল্য পাওয়ায় দুর্গাপুরে দিনে দিনে মরিচ চাষের প্রসার ঘটছে।

স/আর