৮৪ বছরে তৃতীয় বারের মতো এমএ ডিগ্রী অর্জন রাজশাহীর শাহজাহানের, গিনেস বুকে রেকর্ডের অপেক্ষায়


নিজস্ব প্রতিবেদক:

৮৪ বছর বয়স তাঁর। এই বয়সে দেশের অন্য বয়স্ক ব্যক্তিরা যখন নানা রোগ-বালাই নিয়ে পর্যুদস্ত, তখন তিনি পড়ার টেবিলে সময় কাটান। তারই ফসল হিসেবে এই তো সবেমাত্র তৃতীয় বারের মতো এমএ ডিগ্রী অর্জন করলেন তিনি। তিনি হলেন রাজশাহী নগরীর টিকাপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান বিশ্বাস। এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এবং ইংরেজীতে এমএ ডিগ্রী অর্জন করেছিলেন তিনি। এবার উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে এমএ ডিগ্রী অর্জন করলেন প্রবীণ শাহজাহান বিশ্বাস। সম্প্রতি এ ডিগ্রী অর্জন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। দেশের ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ বয়সে তৃতীয় বারের মতো এমএ ডিগ্রী অর্জন বলেও দাবি করেন শাহজাহান বিশ্বাস। এর মাধ্যমে তিনি গিনেস বুকেও নাম লিখাতে চান অবসরপ্রাপ্ত প্রথম শ্রেণির এ কর্মকর্তা।

শাহাজান বিশ্বাস জানান তিনি, ১৯৩৯ সালের ২৭ ফেব্রয়ারি রাজশাহী নগরীর টিকাপাড়া এলাকায় জন্মগ্রণ করেন। এর পর ১৯৫৯ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স সম্পন্ন করে দেশে ফিরেন। ১৯৭৬ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম অর্থনীতিতে এমএ পাশ করেন। এর পর সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন তিনি। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। চাকরিজীবনে অবসর নিয়ে ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয় বারের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজীতে এমএ করেন। এর পর পড়ার নেশা মাথায় থেকে যায়নি তাঁর।

শাহজাহান বিশ্বাস গিনেসবুকে নাম লিখাতে আবারো ভর্তি হন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে। এবার তিনি রাষ্ট্র বিজ্ঞানে এমএ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স করার সময় রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতিতে পড়েছিলেন তিনি। সেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের টান তাঁর যায়নি এখনো। ফলে ৮৪ বছর বয়সে এসেও শাহজাহান বিশ্বাস নিয়ম করে বসতে থাকেন পড়ার টেবিলে। ব্যক্তি জীবনে স্ক্রী ছাড়াও চার কন্যা সন্তান ও এক ছেলের জনক শাহজাহান বিশ্বাস নাতি-নাতনীদের সঙ্গেও কখনো কখনো পড়তে বসতেন। আর তার ফল হিসেবে নিজের অর্জনের খাতায় যোগ করেন তৃতীয় এমএ ডিগ্রী।

শাহজাহান বিশ্বাস বলেন, ‘আমার সখই হলো পড়া। আমি এই বয়সেও নানা বইপত্র নিয়ে পড়ে থাকি। মনটাও ভালো থাকে। এখনো একাই পথ চলি। নিজের কাজ নিজে করি। শরীর মন দুটোই ভালো থাকে পড়া-শোনার মধ্যে থাকি বলে। তবে আমার ইচ্ছে হলো সর্বোচ্চ বয়সে তৃতীয় বারের মতো এমএ ডিগ্রী অর্জন করে গিনেস বুকে নাম লেখানো। আমি যোগাযোগ করছি। এখন দেখি এই খেতাবটি জুটে কিনা।

স/আর