৫ কারণে উন্নয়ন প্রকল্প হাতছাড়া হচ্ছে দেশীয় সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের

বড় প্রকল্পে দেশীয় সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সম্মক ধারণা না থাকা ও পরামর্শকদের চাহিদা মোতাবেক বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহার হচ্ছে বলে মনে করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।

বেসিস মনে করে ৫ কারণে দেশীয় সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করতে পারে না। সমস্যাগুলো দূর করতে ও একটি রূপরেখা তৈরি করতে মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বেসিসের একটি প্রতিনিধিদল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে।

‘টেকসই ডিজিটাল গভর্নমেন্ট বাস্তবায়নে স্থানীয় সফটওয়্যার খাতের চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক সভায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও বিভিন্ন বিভাগের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

বেসিসের পক্ষ থেকে সংগঠনের শীর্ষ কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বেসিসের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিদেশী আইটি সিস্টেম ব্যবহারের ফলে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হলেও দেশীয় তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের কর্মসংস্থান খুব কম হয়। কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণ কাজে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক অর্থ পরিশােধ করতে হয়। এছাড়া বিদেশি আইটি সিস্টেমের বাংলাদেশের পরিবেশ, ভাষাগত এবং ব্যবসায় সংস্কৃতি সম্পর্কে কম ধারণা থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই প্রকল্পে সমস্যা দেখা দেয়।

বেসিসের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়- পরিকল্পনা পর্যায়ে সফটওয়্যারের সঙ্গে ডাটাবেজ লাইসেন্স, ইনফ্রাস্ট্রাকচার সংযােগ করে অন্তর্ভুক্তি করার কারণে প্রকল্পটি টার্ন-কি আকারে প্রণীত হয়। এর ফলে বাংলাদেশি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের জন্য অংশগ্রহণ সহজ হয় না। প্রকল্প কনসালটেন্টদের বাংলাদেশে সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা

থাকায় অনেক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করা হয়, টেন্ডার ডকুমেন্টসমূহে দেশি আইটি প্রতিষ্ঠান ও দেশি তথ্য প্রযুক্তিবিদদের অংশগ্রহণের বিষয় অন্তর্ভুক্ত না থাকায় স্থানীয় পর্যায়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করার সুযােগ থাকে না এবং কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে যােগ্যতা থাকলেও কঠোর শর্তাদি (ব্যাংকের স্থিতি, তারল্য, কোম্পানির বার্ষিক টার্নওভার, পারফরম্যান্স গ্যারান্টি ইত্যাদি) বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করে।

সভায় বেসিসের প্রতিনিধিরা জানান, ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে দেশীয় তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায় সরকার। প্রকল্পের অধীনে প্রণীত সিস্টেমসমূহ পরবর্তীতে বাজেট পাওয়ায় চলমান রাখা কঠিন হয়। বিদেশি অর্থায়নে প্রকল্পের অধীনে অনেক সিস্টেম পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। কোনাে কোনাে প্রকল্পে মাসিক বেতনভিত্তিক আইটি কনসালটেন্ট নিয়ােগ করে সিস্টেম তৈরি করা হচ্ছে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফটওয়্যার কোডের পরিবর্তে ডিপিপিতে সফটওয়্যার প্রকিউরমেন্ট কেনা হচ্ছে ব্যক্তিগত কনসালটেন্সি সার্ভিসের ইকোনমিক কোডে। সভার আগে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমাদের সরকার ডিজিটাল সরকার। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিকে আমরা কাজে লাগাতে চাই। বেসরকারি খাত এরই মধ্যে অনেক এগিয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা বেসিস পাবে।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ