২৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবার ইংল্যান্ডের আকাশে পাখিটি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসে ইগল বিলুপ্তপ্রায় হয়ে গেছে। তবে গবেষকেরা আশার কথা শোনাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, সদর্পে ফিরে আসছে ইগলের দল। এটা অবশ্য এমনি এমনি হয়নি। এর জন্য নেওয়া হয় বিশেষ প্রকল্প, যা আশার আলো দেখাচ্ছে।

আয়ারল্যান্ডের গ্লেনভেগ ন্যাশনাল পার্কে ২০০১ সাল পর্যন্ত গোল্ডেন ইগল প্রজাতির কোনো পাখি দেখা যায়নি। পরে গোল্ডেন ইগল ট্রাস্টের সহায়তায় স্কটল্যান্ড থেকে এই প্রজাতির ইগল সংগ্রহ করে এখানে অবমুক্ত করা হয়। এখন তারা সংখ্যায় বেড়ে অনেক হয়েছে। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হলো ইংল্যান্ডে। আর এ কারণেই ২৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের নর্থ ইয়র্ক মুরসের আকাশে উড়তে দেখা গেল বিলুপ্তপ্রায় একটি হোয়াইট–টেলড ইগলকে।

গুড নিউজ নেটওয়ার্কের খবরে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ডে হোয়াইট–টেলড ইগল বিলুপ্তপ্রায় পাখিতে পরিণত হয়েছে। অথচ সী ইগল নামে পরিচিত এই পাখি পৃথিবীতে ইগলের সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় থাকা প্রজাতি। দেশটিতে এই প্রজাতির ইগলের সংখ্যা বাড়াতে নেওয়া হয় ৫ বছরের একটি প্রকল্প। কাজটি করে রয় ডেনিস ওয়াইল্ডলাইফ ফাউন্ডেশন ও ফরেস্ট্রি ইংল্যান্ড। আয়ারল্যান্ডের গ্লেনভেগ ন্যাশনাল পার্ক যেখান থেকে ইগল এনেছিল, এই প্রকল্পের আওতায় সেই স্কটল্যান্ড থেকেই এই প্রজাতির ইগল সংগ্রহ করা হয়। তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় দেশের দক্ষিণ উপকূলীয় আইল অব ওয়াইসের বন্য এলাকার দিকে।

হোয়াইট–টেলড ইগল যেন অন্যত্র চলে না যায়, সে জন্য কাজ করেছেন একদল বিশেষজ্ঞ ও নিবেদিতপ্রাণ স্বেচ্ছাসেবী। পাখিগুলো যেন সুন্দর আর সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে বড় হতে পারে সেজন্য খাবার দেওয়া হয়েছে। খাবারের সন্ধানে মানব বসতির দিকে গিয়ে উইন্ড মিলে যেন আটকে না যায়, কাঁচের ঘরে যেন ধাক্কা না খায় কিংবা যেন কোনো বিপদে না পড়ে; সেজন্য খাবার দিয়ে তাদের এই অঞ্চলেই রাখা হয়। তারা যেন এই অঞ্চলকেই তাদের বাড়ি মনে করে, সে জন্যই সমস্ত আয়োজন।

এই প্রকল্পের মূল পরিকল্পনাকারী রয় ডেনিস বলেন, ‘চমৎকার সব পাখির পুনঃপ্রবর্তন বা ফিরে আসা নিয়ে আমি আমার জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছি। সে হিসেবে বলতে পারি, হোয়াইট–টেলড বা সী ইগলকে ইল্যান্ডের আকাশে উড়তে দেখতে পাওয়াটা ভীষণ আনন্দের। ইংল্যান্ডের দক্ষিণে এই প্রজাতির ইগলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া মানে নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ডেও তাদের সংখ্যা বাড়বে। দক্ষিণ ইউরোপের অর্ধেকটা এলাকাজুড়ে এই প্রজাতির ইগলের সংখ্যা বাড়ানো প্রকল্পটির একটি উদ্দেশ্য।’

রয় ডেনিস ওয়াইল্ডলাইফ ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, পাখিগুলোর পায়ে রেডিও ট্রান্সমিটার লাগানো আছে। এর মাধ্যমে তাদের গতিবিধি ট্র্যাকিং করা হয়। সেখান থেকে জানা গেছে, একটি হোয়াইট–টেলড ইগল অক্সফোর্ডশায়ার থেকে ১৫ দিনে ২০০ মাইল পাড়ি দিয়ে নর্থ ইয়র্ক মুরস ন্যাশনাল পার্কে গেছে।

সূত্র : প্রথম আলো