১৩ রাজ্যে তিন ধাপের চ্যালেঞ্জে বিজেপি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ভারতের লোকসভা নিবাচন কেবল শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে অনেকেই প্রশ্ন করছেন, ২০১৯-এ কতটা আসন পাচ্ছে ক্ষমতাসীন বিজিপি। নির্বাচনী জরিপগুলো অবশ্য বিজেপিকেই এগিয়ে রেখেছিল।

কিন্তু প্রথম ধাপের নির্বাচনের পরই সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে শেষ পর্যন্ত কারা কতটি আসন পাচ্ছে, নির্ভর করছে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের (ফ্যাক্টর) ওপর। প্রথমত, ক্ষমতাসীনদের নির্দিষ্ট ভোট ভাগাভাগি হয়ে যাওয়া এবং দ্বিতীয়ত, বিরোধী ভোটের আরও সংহত হওয়া। ভারতের রাজনৈতিক ভূগোলের বৈচিত্র্যের কারণে একেবারে কেন্দ্র থেকে রাজ্য পর্যন্ত ওই বিষয়গুলো নির্ণায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দেখাচ্ছেন, নরেন্দ্র মোদির দল এবার কতটা আসন পাচ্ছে, সেটা নির্ভর করছে, দেশজুড়ে ১৩টি রাজ্যের ৩৫৩টি আসনে কী ঘটছে তার ওপর। ২০১৪-র নির্বাচনে ওই রাজ্যগুলোর ৭৪ শতাংশই দখলে নিয়েছিল মোদি হাওয়া। এ রাজ্যগুলোয় বিজেপি যে চ্যালেঞ্জের মুখে, তাকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়।

প্রথমত, এবার মোট ১৬২টি আসনে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়ান্স (ইউপিএ) জোটের সরাসরি মুখোমুখি বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়ান্স (এনডিএ)। এই ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ছে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, গুজরাট, মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ড। গতবার এ আটটি রাজ্যের ১৬২টি আসনের মধ্যে ১৫১টিই জিতে নেয় এনডিএ। আসনগুলোয় গতবারের ভোটব্যাংক নিশ্চিত করাই এবার এ জোটের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

দ্বিতীয়ত, তিনটি রাজ্যের ১৪৮টি আসনে বিরোধী ২০১৪ সালের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। এ তিনটি রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও কর্ণাটক। গতবার এ রাজ্যগুলোয় বলতে গেলে বিজেপির কোনো প্রতিপক্ষই ছিল না। ফলে ১২১ আসনই ঝোলাই ভরে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশে প্রধান দুই বিরোধী দল অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু এবার একসময়ের চরম বিরোধী অখিলেশের সঙ্গে জোট বেঁধেছেন মায়াবতী। ২০১৪ সালের লোকসভায় এবং ২০১৭ সালের বিধানসভায় দু’দল মিলে যে ভোট পেয়েছিল, তা বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের সমান। এছাড়া এবার বিজেপি হটাতে উঠেপড়ে লেগেছে এ জোট। ফলে এ রাজ্যে গতবার বিজেপি যে ৭৩টি আসন জিতেছিল, তা উল্টে ৩৭ হয়ে যেতে পারে।

তৃতীয় ক্যাটাগরিতে পড়ছে দুটি আসন। পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা- এ দুই রাজ্যে বিজেপি নেই বললেই চলে। গতবার দুই রাজ্যের ৬৩টি আসনের মাত্র ৩টি পেয়েছিল দলটি। তবে এবার তাদের আশা ভালো করার। পশ্চিমবঙ্গের প্রধান দল মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধান বিরোধী দল বামপন্থী কমিউনিস্ট পার্টি (মাক্সিস্ট)। ওড়িশায় ক্ষমতাসীন বিজু জনতা দল (বিজেডি)। তবে ২০১৪ সালের ভোটের হিসাব-নিকাশ বলছে, পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না বিজেপি।মোদির নির্দেশে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন -চন্দ্রবাবু নাইডু : প্রথম ধাপের নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতাদের বিরুদ্ধে এন্তার অভিযোগ আনলেন বিজেপির সাবেক শরিক ও অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু। শনিবার নয়াদিল্লিতে কমিশনের কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎ করে তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে তার রাজ্যে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ইভিএম সঠিকভাবে কাজ করেনি।

বলেন, নির্বাচন কমিশন মোদি সরকারের নির্দেশে কাজ করছে। রাজ্যের ১৫০টি আসনে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছেন নাইডু। হুমকি দিয়েছেন, কমিশন যদি এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেয়, কমিশনের সামনেই ধরনায় বসবেন তিনি। এদিন চন্দ্রবাবু নাইডুর সঙ্গে ছিলেন আইনসভায় তেলেগু দেশমের সদস্য এবং দলের সিনিয়র নেতারা। চন্দ্রবাবু বলেন, এটা একটা বড় প্রতারণা। জাতির জন্য দুর্যোগ। নির্বাচনের দিনই নাইডু নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি দিয়ে পুনর্র্নির্বাচনের দাবি জানান।