১০৪ গাড়ির সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত, তবে চূড়ান্ত নয়

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

চট্টগ্রাম বন্দরে ২০০৬ মডেলের একটি রেঞ্জ রোভার জিপ কিনতে দাম উঠেছে ৫৩ লাখ টাকা। চার হাজার ১৯৭ সিসির এই গাড়িটি ইংল্যান্ডে তৈরি। নিলাম কমিটি এটি বিক্রির জন্য সংরক্ষিত মূল্য ধার্য করেছিল চার কোটি ৩০ লাখ টাকা। পর্যটকদের কারনেট সুবিধার আওতায় ২০১১ সাল থেকেই গাড়িটি চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ডে একটি কনটেইনারের মধ্যে আটকে ছিল।

গত ১৯ জুন চট্টগ্রাম কাস্টমসের সর্বশেষ নিলামে গাড়িটি কিনতে সর্বোচ্চ ৫৩ লাখ টাকা দর দিয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক তৈরি পোশাক শিল্পের মালিক ফারজানা ফ্যাশনস। তবে শুধু সর্বোচ্চ দর দিলেই গাড়ি নিশ্চিতভাবে পাবেন এমনটি বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন কাস্টমসের উপকমিশনার আলী রেজা হায়দার।

নিলামে ২০০২ মডেলের দুই হাজার ৫৯৭ সিসির একটি মার্সিডিস বেঞ্জ কার কিনতে সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৫৬ লাখ টাকা। অথচ গাড়িটি বিক্রির জন্য নিলাম কমিটি সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ করেছে ৫৮ লাখ ১৪ হাজার টাকা। নীল রঙের ছয় সিলিন্ডার ক্যাপাসিটির জার্মানির তৈরি এই কার বন্দর ইয়ার্ডে কনটেইনারের মধ্যে আছে ২০১৩ সাল থেকে। গাড়িটি কিনতে প্রস্তাব দিয়েছেন ঢাকা শুলশান-২ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ শেখ গোলাম মোস্তফা। শতাংশের হিসাবে এই গাড়ির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৯৫ শতাংশ।

কারনেট সুবিধার আওতায় নিয়ে আসার পর আটকে থাকা এ ধরনের ১০৮টি গাড়ি গত ১৯ জুন নিলামে তুলেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। নিলামে এই দামি ব্র্যান্ডের পুরনো গাড়ি কিনতে ১২৬ ক্রেতা অফলাইন ও অনলাইনে অংশ নিয়েছেন। গাড়িগুলোর মধ্যে আছে লেক্সাস, রেঞ্জ রোভার, বিএমডাব্লিউ, মার্সিডিস বেঞ্জ, জাগুয়ার, ল্যান্ড ক্রুজার, মিত্সুবিশি, হোন্ডা ও দাইয়ু কম্পানির কার ও জিপ। এখন সর্বোচ্চ দর দেওয়া সেই দামে গাড়িটি ওই ক্রেতা পাবেন কি না, তা নির্ধারণ করতে একাধিক বৈঠকে বসেছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম কমিটি।

সারা দেশ থেকে নিলামে অংশ নেওয়া দরদাতাদের মধ্যে ১০৪টি গাড়ির সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। প্রতিটি গাড়ির সংরক্ষিত মূল্যের বিপরীতে সর্বোচ্চ দরদাতাদের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতারা গাড়িগুলো পাবেন কি না, জানতে চাইলে নিলাম কমিটির সদস্য চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার আলী রেজা হায়দার বলেন, ‘শুধু সর্বোচ্চ দর দিলেই গাড়ি নিশ্চিতভাবে পাবেন—এমনটি বলা যাবে না। সংরক্ষিত মূল্যের বিপরীতে কত শতাংশ দর জমা পড়ল। আগের নিলামের বিপরীতে এবার দর কেমনসহ একাধিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে নিলাম কমিটি। কমিটিই চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করবে নিলামে উত্তীর্ণদের। ’

সর্বশেষ গত মঙ্গলবারের বৈঠকে তদারক করতে স্বয়ং চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম উপস্থিত ছিলেন। কমিটি এই সপ্তাহের মধ্যেই কত গাড়ি বিক্রি হবে তার তালিকা প্রকাশ করবে।

চূড়ান্তভাবে নির্বাচিতদের গাড়িগুলোর বিপরীতে পুরো রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমার জন্য চিঠি দেবে কাস্টমস। রাজস্ব জমার পর সেই গাড়িগুলো দরদাতাদের হস্তান্তর করা হবে। আর নিলামে অংশ নেওয়া প্রত্যেকে গাড়ির দামের বিপরীতে ১০ শতাংশ হারে জামানত জমা দিয়েছেন কাস্টমসে। নিলামে যাঁরা নির্বাচিত হননি তাঁরা কিভাবে টাকাটা ফেরত পাবেন জানতে চাইলে কাস্টমসের উপকমিশনার আলী রেজা হায়দার বলেন, ‘যাঁরা নির্বাচিত হননি তাঁরা কোনো সময়ক্ষেপণ ছাড়াই টাকা ফেরত পাবেন। এখানে ভোগান্তির সুযোগ নেই। ’

ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িতে চট্টগ্রাম কাস্টমসের দেওয়া তিন কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকার বিপরীতে ২১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকার সর্বোচ্চ দর দিয়েছেন ঢাকার সরকার অটোমোবাইল লিমিটেড। এক কোটি ৯৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকার টয়োটা ব্র্যান্ডের গাড়িটি কিনতে ৫৬ লাখ টাকা দাম দিয়েছে ঢাকার বাসিন্দা মো. শেখ গোলাম মোস্তফা। এক কোটি সাত লাখ টাকার মিত্সুবিশি পাজেরো কিনতে সাত লাখ ২০ হাজার টাকা দাম দিয়েছেন চট্টগ্রামের মোরশেদ আক্তার চৌধুরী। এক কোটি ৭৬ লাখ ৪২ হাজার টাকার টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িটি ৩৫ লাখ টাকায় কিনতে সর্বোচ্চ দর দিয়েছে খুলনার সুগার জুট মিলস।

 

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ