হ্যারি কেন ঝড়ে লণ্ডভণ্ড পানামা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

পাঁচ শটে পাঁচ গোল! ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেন দুই ম্যাচে ৫ গোল করে রাশিয়া বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে গেলেন এগিয়ে। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো আর রোমেলো লুকাকুর দুই ম্যাচে গোল ৪টি করে। আর এই হ্যারি কেনেই রোববার লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল বিশ্বকাপে নবাগত পানামা। নিজনি নভগোরোদে ‘জি’ গ্রুপের খেলায় প্রথমার্ধে ৫-০ গোলে এগিয়ে ছিল ইংলিশরা। প্রথমার্ধে ২ গোল করা হ্যারি কেন দ্বিতীয়ার্ধে করলেন এই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। আর তাতে নিজেদের রেকর্ড ৬-১ গোলের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই এবারের আসরের শেষ ষোলতে চলে গেল ইংল্যান্ড। আগেই দুই জয় পাওয়া বেলজিয়ামেরও ইংলিশদের এই জয়ে নক আউট পর্ব নিশ্চিত হলো। দুটি করে হারে পানামা ও তিউনিসিয়া এই গ্রুপ থেকে বিদায় নিল।

ম্যাচের ২২ মিনিটে দুই গোল করেই আসলে নক আউট পর্বে এক পা দিয়ে রাখে ইংল্যান্ড। এরপর প্রথমার্ধের শেষ ১০ মিনিটে আরো ৩ গোল করে তারা। প্রথমার্ধে ডিফেন্ডার জন স্টোনস ও অধিনায়ক হ্যারি কেন ২টি করে গোল করেছেন। অন্য গোলটি জেসে লিংগার্ডের। ৮ মিনিটে স্টোনস, ২২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে কেন, ৩৬ মিনিটে লিংগার্ড, ৪০ মিনিটে আবার স্টোনস এবং প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে হ্যারি কেন পেনাল্টি থেকে তার দ্বিতীয় গোলটি করেন। দুই ম্যাচে তখন ৪ গোল কেনের। ৬২ মিনিটে করেছেন হ্যাট্রটিক গোল। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৪ গোল করার রেকর্ড ছিল ইংল্যান্ডের। আর ৩ গোলের বেশি ব্যবধানে কখনোই আগে জেতেনি তারা।

বিরতি থেকে ফিরে হ্যাটট্রিক করার পর কোচ হ্যারি কেনকে উঠিয়ে নিয়েছেন। ৬২ মিনিটে দারুণ শটে হ্যাটট্রিক করেন হ্যারি কেন। স্পেনের বিপক্ষে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিকটি করেছিলেন পর্তুগালের রোনালদো। হ্যারি কেন বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের ইতিহাসের তৃতীয় হ্যাটট্রিক ম্যান হলেন। ১৯৬৬ ফাইনালে পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে জিওফ হার্স্ট এবং ১৯৮৬ বিশ্বকাপে পোল্যান্ডের বিপক্ষে গ্যারি লিনেকার হ্যাটট্রিক করেছিলেন। প্রথমার্ধেই ৫ বা তার বেশি গোল করার রেকর্ড বিশ্বকাপে এ নিয়ে ঘটল মাত্র ৫ বার। আর এটা তো ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়ের রেকর্ডই। এবারের আসরে এই নিয়ে দুই ম্যাচে ৭টি করে গোল হলো।

৭৮ মিনিটে পানামার ইলিপে ব্যালয় তাদের সান্তনার গোলটি করলেও তাদের নিয়ে কি ছিনিমিনিই না খেলল ইংল্যান্ড! ওটা আসরে তাদের প্রথম গোল। ব্যালয় অবশ্য ৩৭ বছর ১২০ দিন বয়সে গোল করে বিশ্বকাপ ইতিহাসের চতুর্থ সর্বজ্যেষ্ঠ গোলস্কোরার হয়েছেন।

৮ মিনিটে স্টোনস কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেড করে ইংল্যান্ডের গোল উৎসবের সূচনা করেন। এরপর এসকোবারের ভুলে পেনাল্টি পায় ইংলিশরা। যথারীতি হ্যারি কেন স্পট কিক থেকে গোলটি করেন। ৩৬ মিনিটে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা লিংগার্ড করলেন তার অভিষেক বিশ্বকাপ গোল। রাহিম স্টার্লিংয়ের পাস থেকে দেখার মতো গোল এই তরুণের। ৪০ মিনিটে আবার ডিফেন্স থেকে উঠে আসা স্টোনসের গোল। এবারও হেডে এবং স্টার্লিংয়ের শট গোলকিপার রুখে দিলে তা ফিরে আসার পর। এসকোবার প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটেই আবার ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখলেন। সাথে পানামার শাস্তি। পেনাল্টি। এবং স্পট কিক থেকে ঠিক আগের শটের কপি করে যেন গোল করলেন ক্যাপ্টেন কেন। প্রথমার্ধেই সব আশা শেষ হয়ে গেল পানামার।

এরপর হ্যারি কেনের হ্যাটট্রিক। অগোছালো এবং ভীত পানামা তবু প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছে। দ্বিতীয়ার্ধে হ্যারি কেনের হ্যাটট্রিক গোলটি ছাড়া আর কোনো গোল হজম করতে হয়নি তাদের। এরপর তো শেষে সান্তনার একটি গোল পেয়েছে নবীনরা। এই গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন-রানার্স আপ নির্ধারিত হবে অবশ্য বেলজিয়াম-ইংল্যান্ড ২৮ জুনের হাই ভোল্টেজ ম্যাচ দিয়ে। পানামাকে ৩-০ গোলে হারানোর পর তিউনিসিয়াকে ৫-২ গোলে হারিয়েছিল বেলজিয়ানরা। ইংল্যান্ডের সমান ৮ গোল করেছে তারা। হজম করেছেও সমান ২টি করে গোল।