নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক’ এর ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার হরিয়ানে বিশাল জনসভায় তিনি এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীর বিভিন্ন জায়গার ছয়টি উন্নয়ন কার্যক্রম উদ্বোধন এবং আরো ১৬টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ হাইটেক পার্ক নির্মানের পর জ্ঞানভিত্তিক শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে প্রায় ১৪,০০০ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে; যা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তির বিস্তারসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে হাই-টেক শিল্পের বিকাশ, মৌলিক অবকাঠামো তৈরির মাধ্যমে হার্ডওয়্যার শিল্প প্রতিষ্ঠা করা, আইটি/আইটিইএস শিল্প প্রতিষ্ঠা এবং সংশ্লিষ্ট কার্য পরিচালনার জন্য বিদেশী কোম্পানী আকৃষ্ট করতে সহায়ক পরিবেশ তৈরীর জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক, রাজশাহী” স্থাপন শীর্ষক প্রকল্প।
গত ২২ ডিসেম্বর, ২০১৬ তারিখ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) গত বছরের ২২ ডিসেম্বর, প্রকল্পটি অনুমোদন করে। পার্কটি প্রায় ৩১ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই পাঁচ তলা বিশিষ্ট ইনকিউবেশেন সেন্টার ও বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সেপ্টেম্বরেই ১০ তলা বিশিষ্ট মাল্টি টেনান্ট বিল্ডিং (এমটিবি) ও পুরো জায়গাটিতে মাটি ভরাটের কাজের টেন্ডারসহ অন্যান্য টেন্ডারসমূহ পর্যায়ক্রমে আহবান করা হবে বলে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে। প্রতি তলায় ২০,০০০ বর্গফুট জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা এই প্রকল্পে ২ লক্ষ বর্গফুট জায়গায় ছেলে-মেয়েরা কাজ করার সুযোগ পাবে। এ ছাড়াও সাব-স্টেশন ও জেনারেটর ভবন, গভীর নলকূপ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, ড্রেন, প্রধান রাস্তা, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, সীমানা প্রাচীর, গেইট ও ব্যারাক, ইলেক্ট্রিক্যাল কাজ এবং জিমনেশিয়ামসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক উপাদানগুলো প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জুলাই,২০১৬ থেকে শুরু হওয়া এই প্রকল্প ২০১৯ সালের জুনে শেষ হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক স্থাপনের গুরত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েট, রাজশাহী মেডিকেল,রাজশাহী কলেজসহ রাজশাহীতে প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে।তাদের কথা বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে রাজশাহীতে এক জনসভায় এই অঞ্চলের জন্য একটি হাই-টেক পার্ক প্রতিষ্ঠার কথা বলেছিলেন। আজ তিনি হাই-টেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে রাজশাহীবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে রাজশাহীকে একটি প্রযুক্তি নগরী হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করে দিলেন। প্রযুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থানের একটি ডিজিটাল ইকোনমিক হাব হিসেবে রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) জনাব হোসনে আরা বেগম, এনডিসি বলেন, ‘আমরা ৩১ একরেরও বেশী জায়গা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক গড়ে তুলছি। আশা করছি এখানে ১৪ হাজারেরও বেশী তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে। আমরা আইটি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং তাদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি বিবেচনা করে দেশের বিভিন্ন স্থানে মোট ২৯টি হাই-টেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এছাড়া বেসরকারী উদ্যোগে আরো ১১টি আইটি পার্ক কার্যক্রম চালাচ্ছে।’
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক,রাজশাহী’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জনাব এ,কে, এ, এম,ফজলুল হক জানান যে, ‘এই প্রকল্পটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত প্রকল্প হওয়ায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করে এটির বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আশা করি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ শেষ করে এটির সকল কার্যক্রম শুরু করা যাবে।’
প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক জনাব মো. মাহফুজুল কবীর জানান যে, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক এ দেশী বিদেশী বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি আইটি/ আইটিএস নতুন উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান সমূহকে ইনকিউবেশন সুবিধা প্রদান করা হবে।’
স/শ