স্বামীর সন্ধানে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার অন্তঃসত্ত্বা পোশাককর্মী!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

লক্ষ্মীপুরে স্বামীর সন্ধানে এসে পাঁচ মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা পোশাককর্মী (২৫) গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। পরে কৌশলে দৌঁড়ে পালিয়ে এসে তিনি পাশের এক বাড়িতে আশ্রয় নেন।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় ওই নারী লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় গিয়ে পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। পরে তাঁকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার এক বাড়িতে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সোমবার রাতের এ ঘটনা জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়।

জানা গেছে, ওই পোশাককর্মীর বাড়ি বরগুনা জেলায়। তিন বছর আগে মোবাইল ফোনে ক্রস কানেকশনের মাধ্যমে লক্ষ্মীপুরের জহিরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পিকআপভ্যান চালক জহিরুল লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সমসেরাবাদের আইয়ুব আলী পুলের বাসিন্দা বলে তাঁর কাছে পরিচয় দেন। কিছুদিন পর তাঁরা বিয়ে করে চট্টগ্রামে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হলে জহিরুল তাঁকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। সবশেষ গত রোববার রাতে জহিরুলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হলে তিনি তাঁকে লক্ষ্মীপুরে আসতে বলেন। চট্টগ্রাম থেকে সোমবার ভোরে রওনা দিয়ে দুপুরে তিনি লক্ষ্মীপুরের উত্তর তেমুহনীতে আসেন। এ সময় স্বামীর মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে তিনি অপেক্ষা করছিলেন। একপর্যায়ে এক যুবক তাঁর গতিবিধি দেখে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে শাহপুর এলাকায় বোনের বাসায় নিয়ে যান। রাত ১০টার দিকে অপরিচিত দুই যুবক ওই বাসায় এসে তাঁকে ধর্ষণ করে। এ সময় তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম করা হয়। একপর্যায়ে কৌশলে রাত ১২টার দিকে বাসা থেকে দৌঁড়ে পালিয়ে পাশের এক বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। পরে নির্যাতনের ঘটনা বর্ণনা করেন।

আজ বুধবার বিকেল ৪টার দিকে শাহপুর এলাকায় ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনের নিচতলার যে কক্ষে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে- ওই দরজায় তালা ঝুলছে। স্থানীয় কয়েকজন নারী সোমবার রাতে বাসাটিতে কয়েকজন পুরুষের আনাগোনা ও চিৎকারের বিষয়টি টের পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

ধর্ষণের শিকার ওই নারী বলেন, ‘আমার সব সর্বনাশ হয়ে গেছে। হাত-পা ধরে কাকুতি-মিনতি জানিয়েও তাদের অত্যাচার থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারিনি। তারা শুধু আমাকে নির্যাতনই করেনি, সঙ্গে থাকা পাঁচ হাজার ২০০ টাকা লুটে নেয় এবং মোবাইল ফোনসেট ভেঙে ফেলে। এখন আমি কার কাছে যাব?’

শাহপুর এলাকায় ওই বাড়ির মালিক জামায়াতে ইসলামীর নেতা রুহুল আমিন পাটওয়ারী বলেন, ‘বাসাটি আইনজীবীর সহকারী ফৌরদৌস কয়েক মাস আগে ভাড়া নিয়েছেন। তাঁর বাড়ি সদর উপজেলার পার্বতীনগরের মাছিমপুর গ্রামে। সেখানে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।’

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বলেন, পোশাককর্মীর অভিযোগটি পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনটিভি