স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প নিয়ে অসামঞ্জস্য তথ্যে ক্ষুব্ধ সংসদীয় কমিটি

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে অসামঞ্জস্য তথ্য দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। পরে কমিটি পরবর্তী বৈঠকে সুনির্দিষ্ট তথ্য উপস্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্রকল্প নিয়ে আলোচনার সুবিধার্থে বৈঠকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি)’কে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে।

আজ রবিবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ওই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, সাবের হোসেন চৌধুরী, মনজুর হোসেন ও আদিবা আনজুম মিতা অংশগ্রহণ করেন। বিশেষ আমন্ত্রণে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।

কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২১ জুন পর্যন্ত সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ভৌত ও আর্থিক অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনাকালে দেখা গেছে, কিছু প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক হলেও অনেকগুলো প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি তুলনামূলক কম। এছাড়া কয়েকটি প্রকল্পের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যে তথ্য সংসদীয় কমিটিতে উপস্থাপন করা হয়েছে সেটি স্পষ্ট নয়। ওইসব প্রকল্পের বাস্তব অবস্থা স্পষ্ট হওয়া সম্ভব নয়।

বৈঠকে উত্থাপিত কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাস, ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়ন প্রকল্প ২০১৮ সালের জুলাইতে শুরু হয়েছে। চলতি বছর ডিসেম্বরে এটি শেষ হওয়ার কথা। এ সময় পর্যন্ত প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৫ শতাংশ, আর্থিক অগ্রগতি ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
কুমিল্লা কারাগার পুনর্র্নিমাণ প্রকল্প ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়েছে। শেষ হবে চলতি বছর ডিসেম্বরে। প্রকল্পের আর্থিক ও ভৌত অগ্রগতি ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ১৬টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণ প্রকল্প ২০১৮ সালের জুলাইতে শুরু হয়েছে। শেষ হওয়ার কথা এ বছরের জুনে। প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৩৪ দশমিক ১৬ শতাংশ, ভৌত অগ্রগতি ৫৮ শতাংশ।

কার্যপত্রের তথ্যানুযায়ী, র‌্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তর স্থাপন প্রকল্প ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়েছে। শেষ হবে ২০২২ সালের জুন মাসে। আর্থিক অগ্রগতি ২৬ শতাংশ, ভৌত অগ্রগতি ৩৫ শতাংশ। ডিএমপি এলাকায় পুলিশের ৯টি আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প শুরু ২০১৮ সালের নভেম্বরে, শেষ হবে আগামী জুনে। এই প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ২৭ শতাংশ, ভৌত অগ্রগতি ৩০ শতাংশ।

পুলিশের সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প শুরু ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে। শেষ হবে চলতি বছরের জুনে। প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ১২ শতাংশ, ভৌত অগ্রগতি ২৫ শতাংশ। র‌্যাবের অভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্প শুরু ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে, শেষ হবে আগামী জুনে। আর্থিক অগ্রগতি ১৭ শতাংশ, ভৌত অগ্রগতি ২৫ শতাংশ।

বৈঠকে উত্থাপিত কার্যপত্রে চারটি বিভাগীয় শহরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং বেশ কয়েকটি ফায়ার স্টেশন ও কারাগার নির্মাণ বিষয়ক প্রকল্পের বিষয়ে যেসব তথ্য উপস্থাপনা করা হয়েছে তাতে ওই প্রকল্পের প্রকৃত চিত্র সম্পর্কে কিছুই জানা সম্ভব নয় বলে জানান কমিটির সদস্যরা। এ নিয়ে তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং পরবর্তী সভায় সুনির্দিষ্ট তথ্য উপাত্ত উপস্থাপনের জন্য বলা হয়।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ