সৌদি থেকে ফিরে যন্ত্রণামুক্তির জন্য মৃত্যুকেই বেছে নিলেন আসমা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সৌদি আরবে গিয়ে সইতে হয়েছে প্রচণ্ড শারীরিক নির্যাতন। এরপর দেশে ফিরেও মুক্তি মেলেনি যন্ত্রণা থেকে। মানসিকভাবে খুব বেশি ভেঙে পড়েছিলেন। অবশেষে মরে গিয়ে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি নিয়েছেন সৌদিফেরত আসমা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের দেওয়ান আলীর মেয়ে আসমা আত্মহত্যা করেছেন। ২০ নভেম্বর রাতে বোন জামাইয়ের বাড়িতে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

তবে আসমার মৃত্যু নিয়ে পরিবার কোনো অভিযোগ করেনি। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাঁর লাশ দাফন করা হয়েছে। ১৯ বছর বয়সী আসমা তিন বোন, এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট।

পারিবারিক সূত্র জানায়, আসমার পরিবার সিলেটে ভাড়া বাসায় থাকত। সংসারে সচ্ছলতার আশায় আসমা ঢাকায় গার্মেন্টে কাজ শুরু করেন। সেখানে প্রায় তিন বছর কাটান। সুযোগ পেয়ে মাস ছয়েক আগে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। প্রথম তিন মাস ১৮ হাজার টাকা করে পাঠান। এর পর থেকে তাঁর ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। বাঁচতে গিয়ে নিজেই পুলিশের কাছে ধরা দেন। সেখান থেকে দেশে ফেরেন ২৭ অক্টোবর। দেশে এসেও অস্বস্তিতে ছিলেন আসমা। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া আসমা আরো যন্ত্রণার মধ্যে পড়েন আশপাশের মানুষের নানা কথায়। মানুষের গঞ্জনা থেকে মুক্তি পেতেই তিনি মৃত্যুর পথ বেছে নেন।

আসমার বোন আনোয়ারা বেগম জানান, চিপস আনার কথা বলে তাঁকে বাইরে পাঠানো হয়। এসে দেখেন দরজা আটকানো। ঝুলন্ত অবস্থা থেকে আসমাকে উদ্ধার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

কালীকচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শরাফত আলী জানান, আসমা আত্মহত্যা করেছেন। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় পুলিশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করতে দিয়েছে।

সরাইল থানার ওসি মো. শাহাদাৎ হোসেন টিটু জানান, সৌদি থেকে ফিরেও আসমা মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে ছিলেন। মন ভালো করার জন্য তাঁকে বোন জামাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে পাঠানো হয়। সেখানেই এক দিন থাকার পর তিনি আত্মহত্যা করেন।