সেমাইয়ের খাচি তৈরীতে ব্যস্ত জয়পুরহাটের মাহালী সম্প্রদায়

শফিকুল ইসলাম,জয়পুরহাটঃ
রমজানের ঈদে খাবারের তালিকায় প্রথমেই থাকে সেমাই। আর প্রতিটি দোকানে সেই সেমাই রাখার জন্য ব্যবহার হয় বাঁশের তৈরী খাঁচি। তাইতো রোজা ও ঈদ উপলক্ষে জযপুরহাটের মাহালী সম্প্রদায়ের সদস্যরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন এ খাঁচি তৈরীর কাজে।

জয়পুরহাট জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় ২০০ ঘর মাহালী পরিবারের বসবাস। বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র বানিয়ে বিক্রি করে কোন রকমে চলে তাদের সংসার। তবে রমজান এলেই বেড়ে যায় তাদের কাজের পরিধি। এ সময় তারা শুধুমাত্র সেমাই রাখার খাঁচি তৈরীর কাজে ব্যস্ত সময় পার করেন। তবে বাঁশের দাম বেশী হওয়ায় কাঙ্খিত লাভ টিকছে না তাদের। এ মাসে ব্যস্ত থাকলেও পাস্টিক সামগ্রী ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে মন্দা যাচ্ছে ব্যবসা। ফলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। রমজান মাস ব্যতীত তারা প্রায় সারা বছরই কমবেশী ব্যস্ত সময় পার করেন। তবে প্লাষ্টিকের বাজারে কালের আবর্তে হারিয়ে যেতে বসেছে মাহালী সম্প্রদায়ের বাঁশের তৈরী এসব তৈজস পত্র। তবুও বাপ-দাদার এ পেশাকে তারা টিকিয়ে রেখেছে কোনমতে।


মাহলী সম্প্রদায়ের নিখিল চন্দ্র মন্ডল, সুমি রানীসহ অনেকেই সিল্কসিটি নিউজকে জানান, শুধুমাত্র পূর্ব পুরুষের এ পেশাকে টিকিয়ে রাখার জন্য এই কাজটি করে যাচ্ছে তারা। এখানকার সেমাইয়ের খাচি, টাপা, ডালি, চাঙ্গারী, কুলা, খই চালা, গুমাইসহ নিত্য নৈমিত্তিক তৈজসপত্র জয়পুরহাট সহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে নিয়ে যায়। তবে পাস্টিকের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়াই তাদের এই বাশের তৈরী তৈজসপত্র ধ্বংসের পথে। তাই এসব তৈরী পণ্য বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজরদারী করবেন এমনটাই প্রত্যাশা এ সম্প্রদায়ের সহজ-সরল মানুষগুলোর।


জয়পুরহাট ‘বিসিক’ এর উপ-ব্যবস্থাপক মুহাঃ শফিকুল আলম বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহারে বাঁশের তৈরী এসব শিল্পের চাহিদা অনেক কমে গেছে। জয়পুরহাটের ৫টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বসবাস করা দুইশ’র বেশী মাহালী পরিবারের সদস্যদের মাঝে এ পেশাকে টিকিয়ে রাখতে বিসিকের আওতায় যে সব সুুযোগ সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন তা আমরা দিয়ে এ শিল্পকে বাচিয়ে রাখার চেষ্টা করছি।

স/অ