সেপ্টেম্বরে বাড়তে পারে গ্যাসের দাম, শুনানি কাল থেকে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর আগামীকাল রোববার থেকে গণশুনানির আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

এতে ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি কর্তৃক কমিশনে পাঠানো গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর মতামত ও পরামর্শ নেওয়া হবে। শুনানির পর মূল্য সমন্বয়ের নতুন আদেশ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকরের ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।

জানা গেছে, গত বছর আগস্টে গ্যাসের দাম গড়ে ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল, যা গত বছর সেপ্টেম্বরে কার্যকর হয়। আরেক দফা মূল্য বৃদ্ধির জন্য গত মার্চে ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি কমিশনে প্রস্তাব পাঠায়। গ্রাহকভেদে ১০ থেকে ১৪০ শতাংশ পর্যন্ত দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে কোম্পানিগুলো।

যদিও গ্যাস খাতের সব কোম্পানি লাভজনক। তারপরও সব শ্রেণির গ্রাহকের ক্ষেত্রে বাড়ানো হচ্ছে গ্যাসের মূল্য। গড়ে ৮৮ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে গ্যাস খাতের কোম্পানিগুলো।

এর মধ্যে গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম সর্বোচ্চ ১৪০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩০ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার্য গ্যাসে।

তবে কমিশন সূত্র বলছে, এবার সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত দাম বাড়তে পারে। আগামীকাল রোববার কোম্পানিগুলোর এসব প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি শুরু হয়ে চলবে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত।

রোববার গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) সঞ্চালন চার্জ নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার অনুষ্ঠিত হবে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের শুনানি।

পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের প্রস্তাব নিয়ে শুনানি হবে ১০ আগস্ট, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের প্রস্তাব নিয়ে ১১ আগস্ট, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের প্রস্তাব নিয়ে ১৪ আগস্ট, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেডের প্রস্তাব নিয়ে ১৬ আগস্ট এবং সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির প্রস্তাব নিয়ে ১৭ আগস্ট শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এ ছাড়া গ্যাসের বাল্ক (পাইকারি) মূল্যহার নিয়ে ১৮ আগস্ট পেট্রোবাংলা, বিজিএফসিএল, এসজিএফএল ও বাপেক্সের আবেদনের ওপর গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

এ প্রসঙ্গে বিইআরসির সচিব মো. ফয়জুর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর আবেদন যাচাই-বাছাই করে প্রক্রিয়া অনুযায়ী গণশুনানির আয়োজন করা হয়েছে।

গণশুনানিতে  সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ভোক্তা প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিয়ম অনুযায়ী গণমাধ্যমে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। প্রস্তাব যাচাই-বাছাই ও সব পক্ষের যুক্তি বিশ্লেষণ করে সব ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হবে।

 

বিইআরসির তথ্যমতে, গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত (মিটারযুক্ত) প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ১৬ টাকা ৮০ পয়সা। বর্তমানে এর দাম ৭ টাকা। এ হিসাবে মিটারযুক্ত গ্রাহকদের বিল ১৪০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ ছাড়া গৃহস্থালি কাজে সিঙ্গেল বার্নারের (এক চুলা) দাম ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ‘১ হাজার ১০০ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ৮৩ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। দুই চুলায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা, বর্তমানে যা ৬৫০ টাকা। এ ক্ষেত্রে ৮৫ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত গ্যাসের ক্ষেত্রে এক চুলায় ৪০০ থেকে বাড়িয়ে ৬০০ টাকা করা হয়। দুই চুলার ক্ষেত্রে ৪৫০ টাকার স্থলে করা হয় ৬৫০ টাকা।

সব গ্রাহক শ্রেণির গ্যাসের দাম সর্বশেষ বাড়ানো হয় ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে। আর বর্তমান সরকারের সময়ে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর আবাসিকসহ কয়েকটি শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়।

 

সূত্র: রাইজিংবিডি