সেঞ্চুরি করেও হতাশায় লিটন দাস

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

‘আমি যেটা বিশ্বাস করি, ক্রিকেট পুরোটা হতাশার খেলা। এক ম্যাচে রান করব, এক ম্যাচে করব না। একশ করলেও চিন্তা করতে হয় যে আর দশটা রান বেশি করতে পারতাম। ওইসব চিন্তা করলে অবশ্যই আক্ষেপ আছে’-কথাগুলো বলছিলেন লিটন দাস।  গতকাল রোববার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ১২৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।

তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে শুরু থেকেই ঝোড়ো খেলার আভাস দেন লিটন দাস। পুরোটা সময় ধরেই ঝোড়ো ব্যাটিং করে মাত্র ৯৫ বল খেলে তিন ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন। ৯৯ থেকে ১০০ রানের ঘর পার হন ডোনাল্ড টিরিপানোকে চার মেরে।  তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ১০টি চার ও একটি ছয়ের মারে। লিটনের এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, প্রথম সেঞ্চুরি ছিল এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে।

কিন্তু এই ম্যাচ খেলতে নামার আগে নার্ভাস ছিলেন লিটন। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘বিষয়টা হচ্ছে আমি অনেক নার্ভাস ছিলাম আজকে। কালকে রাত থেকে আমি অনেক নার্ভাস। কারণ আমি বাংলাদেশের সঙ্গে অনেকদিন ধরে ওয়ানডে ক্রিকেট খেলছি না। শ্রীলঙ্কায় আমি খেলিনি। তারপরেও আমি জানতাম আমি ওপেন করব। আমার কাছে ‘‘ব্যাক অফ দ্যা মাইন্ডে’’ আরও চাপ ছিল। আমার মনে হয়ে নার্ভাসনেসটা ইতিবাচক ছিল মাঠে। যেহেতু আমি বেশি নার্ভাস, আমাকে ফোকাস নিয়ে খেলতে হবে। যদিও আমি সব শট পারি তা খেলা যাবে না। উইকেটে আমি নার্ভাস যতক্ষণ ছিলাম ততক্ষন ফোকাস ভালো ছিল।‘

৩৬ ওভারের দ্বিতীয় বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে দৃষ্টি নন্দন স্লগ সুইপে মিড উইকেটে বিশাল ছয় মারেন লিটন দাস। আর এই ছয়ই যেন কাল হলো লিটনের জন্য। পায়ে ক্র্যাম্পের জন্য উঠে যেতে হয় মাঠ থেকে। ১০৫ বলে ১২৬ রান করে ড্রেসিংরুমে ফেরেন। এরপরে ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ মিথুন।

মাঠে থাকলে আরও কিছু রান হতো। তবে উঠে যাওয়া সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ‘সিদ্ধান্তটা আমার জন্য সঠিক ছিল, উঠে যাওয়া। সামনে আরও ম্যাচ আছে। ওখানে ব্যাটিং করলে আমি পাঁচ বলে দশ করতাম সর্বোচ্চ। আউটের সম্ভাবনা বেশি থাকতো। এদিক দিয়ে চিন্তা করলে জিনিসটা ভালো’-এভাবেই বলছিলেন লিটন।

লিটন দাসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি, মিথুনের ঝোড়ো ব্যাটিং আর সাইফউদ্দিনের ক্যামিও ইনিংসে ভর করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে রানের পাহাড় গড়েছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ছয় উইকেট হারিয়ে ৩২১ রান করে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ১৬৯ রানের বিশাল জয় নিয়ে সিরিজ শুরু করে টাইগাররা।

দীর্ঘধুসর অবসাদের পর ক্লান্তিকর পরাজয়ের যাত্রা শেষ হলো। ১৬৯ রানে জিতে ১-০ তে এগিয়ে গেল সিরিজে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপে জয় ছিল বাংলাদেশের। এরপর শুধুই পরাজয়বৃত্তের পাথর দেয়ালে ঘুরে মাথা কুটছিল টাইগাররা। সিলেটের পূন্যভূমিতে অবশেষে জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিজয় ছিল আগে ১৬৩ রানে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকায়। সেই রেকর্ডও ভেঙে গেল। বাংলাদেশ আজ ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে জিতেছে।