সুপ্রিম কোর্টে মামলা পরিচালনায় দুই আইনজীবীকে ৪ সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক

প্রধান বিচারপতিকে লেখা চিঠিতে আদালত অবমাননামূলক ভাষা ব্যবহার করার ব্যাখ্যা দিতে বিএনপিপন্থী দুই আইনজীবীকে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।এই চার সপ্তাহ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের কোনো বেঞ্চে তারা মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না বলে আদেশে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী।

নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত দুই আইনজীবী হলেন- অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মহসীন রশিদ ও অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল।যারা নিজেদেরকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি অ্যাডহক কমিটির কনভেনর ও সদস্যসচিব হিসেবে দাবি করে প্রধান বিচারপতিকে একটা চিঠি দিয়েছিলেন।যে চিঠির ভাষা ছিল আদালত অবমাননাকর।

এ কারণে দুই আইনজীবীকে তলব করেন আপিল বিভাগ। আজ সশরীরে তারা আপিল বিভাগে হাজির হয়ে সময় প্রার্থনা করেন। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আগে চিঠিটা পড়ুন।’ এরপর শাহ আহমেদ বাদল চিঠিটি পাঠ করেন। এ সময় এর প্রতিটি বাক্যের ব্যাখ্যা চান প্রধান বিচারপতি। কিন্তু তাৎক্ষণিক কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। এরপরই নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন আপিল বিভাগ।

সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, দুই আইনজীবীর ব্যাখ্যা যদি সন্তোষজনক না হয়, তাহলে আরও বড় সাজা হতে পারে।

এর আগে গত ৩ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতিকে লেখা চিঠিতে আদালত অবমাননামূলক ভাষা ব্যবহার করার ঘটনা ব্যাখ্যা দিতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সমর্থিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মহসিন রশিদ ও অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদলকে তলব করেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ স্বপ্রণোদিতভাবে এ আদেশ দেন।

গত ১ ডিসেম্বর এডহক কমিটির প্যাডে প্রধান বিচারপতি বরাবর চিঠি দেন অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ ও অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল।চিঠিতে দুই আইনজীবী লিখেছেন, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নাগরিকদের ওপর নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। পাশাপাশি জামিনযোগ্য মামলায় জামিন না দেওয়া ও তাড়াহুড়া করে বিচার করায় ন্যায়বিচারকে কবর দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে উল্লিখিত এই বক্তব্য প্রধান বিচারপতিসহ দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নজরে আসে। এরপরই গত ৩ জানুয়ারি বেলা ১২টায় এজলাসে উপস্থিত হন প্রধান বিচারপতিসহ পাঁচ বিচারপতি। তারপর স্বপ্রণোদিত হয়ে তাদের তলবের আদেশ দেন।

আদেশে আপিল বিভাগ বলেন, এতে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে তা বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছে।