সুদ ব্যবসায়ীর ছেলেকে ফাঁসাতে গিয়ে ভাইসহ কারাগারে দুর্গাপুরের ইউপি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ব্যাংক কর্মকর্তার সহযোগিতায় সুদ ব্যবসায়ীর ছেলেকে ফাঁসাতে ভুয়া একাউন্ট খুলে প্রতারণা মামলা দিয়ে কারাগারে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তাঁর নাম রিয়াজুল ইসলাম। তিনি উপজেলার দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা। একই ঘটনায় রিয়াজুলের ভাই সাইদুর রহমানকেও কারগারে পাাঠিয়েছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার (২ মে) এ ঘটনাটি ঘটে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, জেলার পুঠিয়া উপজেলার মহেন্দ্রা এলাকার সুদ ব্যবসায়ী আক্কাছ আলীর নিকট থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চড়া সুদের বিনিময়ে হাওলাত নেন দুর্গাপুরের দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা রিয়াজুল ইসলাম। বিনিময়ে একটি চেকের পাতাও দেন রিয়াজুল। ওই টাকা সুদের আসলে প্রায় ৭০ লাখ টাকা হয়ে যায়। সেই টাকার হাত থেকে বাঁচতে রিয়াজুল নানা ফন্দি আটতে থাকেন। একপর্যায়ে কৌশলে আক্কাছের ছেলে সেন্টু আহমেদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও এক কপি ছবি সংগ্রহ করেন। সেই ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিয়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক দুর্গাপুর শাখার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আব্দুর রহমানের সহযোগিতায় ওই ব্যাংকে ভুয়া একাউন্ট খোলেন রিয়াজুল।

রিয়াজুল তাঁর ভাই সাইদুর রহমানকে দিয়ে স্টেন্টু আহমেদের নামে ভুয়া একাউন্টটি খোলেন। এতে জাল স্বাক্ষর করেন সাইদুর রহমান। এরপর বছর খানেক আগে সেন্টুর ওই একাউন্ট নম্বরে সাইদুর রহমান ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকার একটি চেক পাঠানন। কিন্তু একাউন্টে টাকা না থাকায় সেটি ফেরত পাঠানা হয় ব্যাংক থেকে। এরপর চেক জালিয়াতির অভিযোগে একটি মামলা করেন সাইদুর রহমান।

সেই মামলাটিয় রাজশাহীর দুর্গাপুর আদালত থেকে সুদ ব্যভসায়ী আক্কাছের ছেলে সেন্টুর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরে বিষয়টি জানতে পারেন তারা। এরপর আদালত থেকে আক্কাছ আলী তাঁর ছেলেকে জামিন করিয়ে কৃষি ব্যাংক দুর্গাপুর শাখায় খোঁজ-খবর নেন। সেইসঙ্গে ভুয়া একাউন্ট করার অভিযোগে এবং টাকা ধার নিয়েও পরিশোধ না করায় চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম, তাঁর ভাই ও ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুর রহমানের নামে মামলা করেন আক্কাছের ছেলে সেন্টু। সেই মামলায় জামিন নিতে গেলে গত বৃহস্পতিবার আদালত রিয়াজুল ও তার ভাইকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুর রহমান এখনো পলাতক রয়েছেন।

এর আগেও সম্প্রতি রিয়াজুলকে দুর্গাপুর সহকারী কর্মকর্তার (ভূমি) সঙ্গে পুকুর কাটার সময় খারাপ আচরণ করার অপরাধে এক মাসের জেল দেওয়া হয়েছিল। পরে আপিল করে সেই মামলা থেকে রেহায় পান রিয়াজুল।

স/আর