সীমান্তে মিয়ানমারের সেনা-বিদ্রোহী সংঘর্ষ, চীনের নিন্দা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: 

মিয়ানমারের উত্তরের চীনা সীমান্তের কাছে প্রান্তিক ও দুর্গম শান রাজ্যে সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে ১৯ জন প্রাণহানী এবং বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে চীনের সরকার।

গতকাল শনিবার শান রাজ্যের মুসেতে সেনাবাহিনীর দুটি বেইজের কাছে এবং আরেকটি লাশিও শহরে যাওয়ার পথে একটি সেতুর কাছে মিযানমারের সেনাবাহিনী ও তা’য়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মিয়ানমারে যে কয়টি সশস্ত্র গোষ্ঠী জাতিগত স্বায়ত্বশাসনের জন্য লড়ছে তার মধ্যে টিএনএলএ একটি।

নিহতদের মধ্যে সেনাবাহিনীর চার সদস্যও রয়েছেন। যে স্থানে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে সেটি চীনের ইউনান প্রদেশের সীমান্তবর্তী। ইউনান প্রদেশ আর শান রাজ্য একটি নদী দিয়ে বিচ্ছিন্ন।

মিয়ানমারের চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই গোলাগুলির সময় বিচ্ছিন্নভাবে গুলি গিয়ে চীনের সীমানায় পড়েছে। এ ছাড়া অনেক মানুষ চীনে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।

মার্কিন বার্তা সংস্থা থমসন রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘চীনের পক্ষ থেকে সংঘর্ষের ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতির ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারকে ‘আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ’ পাঠানো হয়েছে বলেও চীনা দূতাবাসের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। মিয়ানমার সরকার দুই পক্ষকে ‘ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শন’, যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা এবং ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। যাতে চীন-মিয়ানমার সীমান্তে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় থাকে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংঘর্ষের মধ্যে দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে অনেক সাধারণ মিয়ানমারের নাগরিক চীনের ভূখণ্ডে গিয়ে আশ্রয় নেন। চীন সেই সময় সেখানে তাদের জন্য শারণার্থী ক্যাম্পও স্থাপন করে দেয়।

২০১৭ সালে চীনের দেওয়া হিসাব মতে, সহিংসতা আর হানাহানির কারণে মিয়ানমার থেকে প্রায় ২০ হাজারের অধিক মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। এবং ২০০৯ ও ২০১৫ সালের সহিংসতার সময় ১০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।

এসব ঘটনা চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে কূটনৈতিক বন্ধনকে শীতল করছে। চীন বর্তমানে যে উচ্চাকাঙ্ক্ষী ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান বেল্ট’ নীতির জন্য কাজ করছে শান রাজ্যের সীমান্ত তার অন্তর্ভুক্ত। এই অঞ্চলের একটি অংশের প্রবেশমুখ হচ্ছে ইউনান প্রদেশ ও শান রাজ্যের সীমান্ত।

মিয়ানমারের বিভিন্ন রাজ্যে এ ধরনের জাতিগত সহিংসতা চলছে। গত বছরের জুলাই থেকে সেনাবাহিনীর অত্যাচারের মুখে রাখাইন রাজ্য থেকে অন্তত সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এরপর সরকারি বাহিনী ও জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার মুখে উত্তরের কাচিন রাজ্য থেকেও অসংখ্য মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।

 

এনটিভি