সীমান্তে অশান্তির আবহেই ভারত ও পাক মহারণ কাল

সিল্কসিটিনিউজকে ডেস্ক: সীমান্তে দুই দেশের চলতি সংঘাতের ছায়ায় রবিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান। বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলা কতটা যুক্তিসঙ্গত, তা নিয়ে কিন্তু বিভিন্ন মহলে উঠছে প্রশ্ন। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি অবশ্য এসব বিষয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নন। চাপ কাটাতে তিনি বলেছেন ‘আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই এই ম্যাচটাকেও দেখা উচিত। যখন ব্যাট করতে নামব, তখন দেখব না বিপক্ষ শিবিরে কারা রয়েছে। একটাই লক্ষ্য থাকবে, দলকে জেতানো।’
কোহলি ভালোই জানেন, ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ দুই দেশের সমর্থকদের কাছে যুদ্ধের মতো। এই ম্যাচটা জিতলেই দেশবাসী অকাল দেওয়ালিতে মেতে উঠবে। ট্রফি জিততে না পারলেও বীরের সম্মান জুটবে। আর সেই কারণেই পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অভিযান শুরু করতে মরিয়া ‘টিম ইন্ডিয়া’।
টি-২০ কিংবা ৫০-৫০ বিশ্বকাপে ভারতকে একবারও হারাতে পারেনি পাকিস্তান। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির তথ্য কিছুটা ব্যতিক্রমী। তিনবারের সাক্ষাৎকারে পাকিস্তান জিতেছে দু’বার। ভারত একবার! লড়াইয়ের মঞ্চ যেমনই হোক, বাইশগজে ভারত-পাক ম্যাচ ঘিরে নানা সমীকরণ কাজ করে দুই দেশের মধ্যে। আর সমর্থকদের কাছে এই ম্যাচ বারুদে ঠাসা গনগনে উত্তেজনার লড়াই! আর সেটা মাঠে ও মাঠের বাইরেও।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে মাঠের বাইরে লড়াইটাও দারুণ জমে উঠেছে। দুই দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটাররা বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছেন। প্রাক্তন ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সেওয়াগ এদিন প্রাক্তন পাক পেসার শোয়েব আখতারকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘রবিবারের ম্যাচে পাকিস্তানকে ‘বেগুনের ভরতা’ বানিয়ে ছাড়বে ভারত। আশাকরি পাকিস্তানের জনগণ সেদিন (পড়ুন হারের পর) টিভি সেট ভাঙবেন না। সময় থাকতে থাকতে একটা রেডিও সেট কিনে নেওয়া উচিত। সেটা ভাঙলে কম খরচ পড়বে।’ এটা শুনে ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ পালটা বলেন, ‘আমাদের দেশে বহু চিনা টিভি সেট রয়েছে। ভাঙলেও ক্ষতি নেই। তবে সেওয়াগের মনে রাখা উচিত, একদিনের ক্রিকেট ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সাফল্য কিন্তু খুবই ভালো।’
যদিও পাকিস্তান আজ পর্যন্ত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অর্থাৎ ‘মিনি বিশ্বকাপ’ জিততে পারেনি। এককভাবে ভারত গতবারের চ্যাম্পিয়ন। এবারও খেতাব জয়ের প্রবল দাবিদার কোহলি ব্রিগেড। কিন্তু কোচ অনিল কুম্বলের সঙ্গে ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলির মতপার্থক্য এমন একটা সময়ে প্রকাশ্যে এসেছে, যা মোটেই কাঙ্খিত ছিল না। এতে দলের ফোকাস নড়ে যেতে পারে।
তারুণ্যের পাশাপাশি অভিজ্ঞতার দারুণ মিশেল রয়েছে ভারতীয় দলে। মহেন্দ্র সিং ধোনি, যুবরাজ সিং, বিরাট কোহলি, রহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ানদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হার্দিক পান্ডিয়া, যশপ্রীত বুমরাহর মতো তরুণ ক্রিকেটাররা। বিশেষ নজর থাকবে বিরাট কোহলির ওপর। পাকিস্তানকে দেখলেই তিনি জ্বলে ওঠেন। এবারও তাঁর ব্যাট ঝলসে উঠবে কি? সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।
ক্রিকেট পণ্ডিতরা বলছেন, শক্তিশালী পেস আক্রমণের জন্য ‘টিম ইন্ডিয়া’ অনেকটাই এগিয়ে। তুলনায় পাকিস্তান দলে নতুন মুখ বেশি। তাই অচেনা ‘শত্রু’কে কিছুটা হলেও সমীহ করছেন কোহলিরা। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট এই পাকিস্তান দলটির বেশ কিছু ম্যাচের ভিডিও ফুটেজ জোগাড় করে রণকৌশল সাজিয়েছে। সেই ছকেই কোহলিরা রবিবার বার্মিংহামে পাক-বধে সামিল হবেন।