সিলেটে আলোচিত দুই মামলার রায় ৮ ও ৯ মার্চ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সিলেটের বহুল আলোচিত দুটি মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ৮ ও ৯ মার্চ। ওই দুইদিন আদালত প্রাঙ্গণে যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ৮ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিসের রায় ঘোষণা করবেন সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বিচারক নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলাটির রায় লিখবেন বাংলায়। আর পরেরদিন ৯ মার্চ দুপুরে পলাতক অবস্থায় সিলেটের স্থানীয় দৈনিক সিলেটের ডাক সংবাদপত্র সম্পাদনা ও প্রকাশনা করে প্রতারণার অভিযোগে রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে দায়ের মামলার রায় ঘোষণা করবেন সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরো।

আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মাহফুজুর রহমান জানান, ৮ মার্চ আলোচিত নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। ওই দিন স্বাভাবিকভাবেই আইনজীবীসহ সাধারণ মানুষের চোখ থাকবে আদালতের দিকে।

তিনি বলেন, ‘আমরা বদরুল ইসলামের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’

নার্গিসকে সজ্ঞাহীন অবস্থায় সিলেটের এমসি কলেজ থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ইমরান কবীর বলেন, ‘ইচ্ছে ছিল ৮ মার্চ সিলেটে এসে নার্গিস আপুর মামলার রায় শুনবো। বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা আর ক্লাস থাকায় আসতে পারবো না। মামলার একমাত্র আসামি বদরুলের সর্বোচ্চ শাস্তি যেন হয় এটুকু প্রত্যাশা রাখি।’

সিলেট মহানগরীর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহাম্মদ জানান, ৮ ও ৯ মার্চ সিলেটের আলোচিত দুটি মামলার রায় ঘোষণা করবেন আদালত। প্রতিদিন আদালতকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে। তবে ওই দুদিন কোনও ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আদালত পাড়াকে ঘিরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।

এদিকে, ৯ মার্চ পলাতক অবস্থায় সিলেটের স্থানীয় দৈনিক সিলেটের ডাক সংবাদপত্র সম্পাদনা ও প্রকাশনা করে প্রতারণার অভিযোগে রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে দায়ের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।

জানা যায়, সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে গত ২ ফেব্রুয়ারি তারাপুর চা-বাগান বন্দোবস্ত নিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতির মামলায় ছেলেসহ রাগীব আলীকে ১৪ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ছেলে-মেয়েসহ রাগীব আলীর বিরুদ্ধে তারাপুর চা-বাগান দখল করে সরকারের হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অপর একটি মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি। রাগীব আলীর ছেলে আবদুল হাইয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষার আবেদন করায় এ মামলার রায় ঘোষণা উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে।

আদালত সূত্র আরও জানায়, এ দুটো মামলায় গত বছরের ১০ আগস্ট আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে রাগীব আলী ছেলেকে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান। রাগীব আলী সিলেটের ডাক পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এবং তার ছেলে আবদুল হাই পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে নাম ছাপা হয়। পলাতক অবস্থায় পত্রিকা সম্পাদনার এ দায়িত্ব পালন করে পাঠকের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন-এ অভিযোগে সিলেট নগরের শাহজালাল উপশহরের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন তালুকদার গত বছরের  ৮ সেপ্টেম্বর মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম আদালতে রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেন। আদালত ওই মামলায় তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। তবে সমনের জবাব না দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগ গঠনের পর সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য হয়। এরপর ৬ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালতের বিচারক আগামী ৯ মার্চ মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন।

প্রতারনা মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শহীদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘পলাতক থেকে রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাই প্রতারণা করেছে তা আদালতে প্রমাণ করতে পেরেছি। এমনকি পত্রিকা প্রকাশনা ও সম্পাদনা সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়মিত প্রকাশিত ২৯টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রকাশনাকে সাক্ষী রাখা হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) আদালত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবেন।’

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন