সিগারেট কিনতে গিয়ে নিখোঁজ নির্মাণ শ্রমিক আশিক, কারাগারে রহমতুল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলায় ঘরছাড়া তরুণদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশের পর সারাদেশে নিখোঁজ আড়াই শতাধিক ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করে র‌্যাব। এতে ১০৫ নম্বরে থাকা আশিক নামের কিশোর একজন নির্মাণ শ্রমিক। তার বাড়ি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার টাঙ্গন দাঁইড়পাড়া গ্রামে। তিনি ফেনীতে কাজ করতে গিয়ে নিখোঁজ হন। তার বয়স ১৫ বছর। সিগারেট কেনার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি আশিক।
অপরদিকে র‌্যাবের নিখোঁজদের তালিকায় ২১৫ নম্বরে থাকা রাজশাহী ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রহমতুল্লাহ রয়েছেন কারাগারে। তিনি গত ১৭ মে থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। রাজশাঞী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজলোর মাগুরা গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে রহমতুল্লাহকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। তারও তিনদিন আগে গত ১৪ মে রহমতুল্লাহ নিখোঁজ হয়েছেন বলে জিডি করেন তার বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক নুরুল আলম।
নিখোঁজ আশিকের বাবা বাবর আলী জানান, তাঁর ছেলে লেখাপড়া শেখেনি। আবার সংসারেও রয়েছে অবাব-অনটন। এ কারণে ছেলে আশিককে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে লাগিয়ে দেন তিনি। বাবর তাঁর ভগ্নিপতি বাদল আলী ওরফে শুকারের সঙ্গে ছেলে আশিককে ফেনীতে কাজে পাঠিয়ে ছিলেন গত ফেব্রুয়ারি মাসে। এর পর গত ১ মার্চ ফেনির নির্মাণাধীন ওই ভবন থেকেই সিগারেট কেনার নাম করে বের হয়ে যায় আশিক। কিন্তু তারপর তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
বাবুর আলী বলেন, ছেলেকে না পেয়ে নিখোঁজের প্রায় একমাস পর গত ৪ এপ্রিল থানায় জিডি করা হয়। ওই ভবনের শ্রমিকদলের সরদার জিল্লুর রহমান জিডিটি করেছিলেন। তাঁর বাড়িও রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার গোপালপুর গাংপাড়া গ্রামে। ওই জিল্লুর রহমানকেই র‌্যব তাদের তালিকায় আশিকের বাবা হিসেবে উল্লেখ করে।
চারঘাট মডেল থানার ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘র‌্যাবের তালিকায় নিখোঁজ আশিকের ব্যাপারে এখনো আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেয়। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সে কিভাবে নিখোঁজ হলো, সেটিও তদন্ত করা হবে।’
এদিকে গত ২৩ এপ্রিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষাথী রমমতুল্লাহ গত ১৭ মে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। ওইদিন থেকেই তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রেজাউস সাদিক।
তিনি বলেন, ‘গত ১৭ মে শিক্ষক রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রহমতুল্লাহকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর পর তাকে তিনদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।’
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রহমতুল্লাহ নামের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী নিখোঁজ রয়েছে থানায় জিডি করা হয়েছিল। ১৪ মে রাতে নগরীর মতিহার থানায় জিডি করেছিলেন ওই বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক নুরুল আলম।
থানায় দায়ের করা জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, ১৩ মে সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে অসুস্থ এক স্বজনকে দেখতে যাওয়ার কথা বলে হল থেকে বের হয়ে যান রহমতুল্লাহ। রাতে সে আর হলে ফিরেনি। এর পর থেকে তার মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের ১০৭ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।

স/আর