সাবেক এমডির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে পর্ষদ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সরকারি খাতের জনতা ব্যাংকে ক্রিসেন্ট গ্রুপের ৫ হাজার কোটি টাকার জালিয়াতির ঘটনায় ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুস সালামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ক্ষমতা পরিচালনা পর্ষদকে দেয়া হয়েছে।

আইন ও বিধিবিধানের আলোকে ব্যবস্থা নেয়ার আগে ব্যাংককে বলা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত নিতে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে ব্যাংক সাবেক এমডির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে। এ বিষয়ে সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, ব্যাংকের পুরনো ঢাকার ইমামগঞ্জ শাখা থেকে ক্রিসেন্ট গ্রুপের ৫টি প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যু করা রফতানি বিল বিধিবহির্ভূতভাবে ক্রয় করা এবং রফতানির মূল্য দেশে না আসার বিষয়ে ব্যাংকের সাবেক এমডি আবদুস সালামের কর্তব্যে অবহেলা, তদারকি ও নিয়ন্ত্রণের অভাব প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামতের ভিত্তিতে ব্যাংকের পর্ষদ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

ক্রিসেন্ট গ্রুপের জালিয়াতির বিষয়ে সাবেক এমডি ও তিনজন সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালকের (ডিএমডি) বিরুদ্ধে চরম দায়িত্বহীনতার অভিযোগ এনে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ২ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল। মন্ত্রণালয় তাদের ওই চিঠি পর্যালোচনা করে উল্লিখিত সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

সূত্র জানায়, ব্যাংকের সাবেক এমডির বিরুদ্ধে যেহেতু পর্ষদ ব্যবস্থা নিতে পারবে, সে কারণে ডিএমডিদের বিরুদ্ধেও তারা ব্যবস্থা নিতে পারবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠি আগামী পর্ষদ সভায় উপস্থাপন করা হবে। এরপর এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত চেয়ে চিঠি দেয়া হবে গভর্নরের কাছে। তাদের মতামত পাওয়ার পরই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আগে সরকারি ব্যাংকের এমডি, ডিএমডি ও জিএম সরকার থেকে নিয়োগ দেয়া হতো। এখন ব্যাংকগুলো কোম্পানিতে রূপান্তর হওয়ায় ব্যাংকের পর্ষদের ক্ষমতা বেড়েছে। ফলে তারাই এখন এসব পদে নিয়োগের প্রাথমিক কাজটি সম্পন্ন করছে। চূড়ান্ত নিয়োগ দিচ্ছে সরকার।

প্রসঙ্গত, জনতা ব্যাংকের এমডির পদ থেকে আবদুস সালাম গত বছরের ২৭ অক্টোবর অবসর নেন। বর্তমানে তাকে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের পর্ষদ তাদের এমডি পদে নিয়োগের জন্য প্রস্তাব অনুমোদন করে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়েছে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক দুই মাস ধরে এটি আটকে রেখেছে। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এতে সায় দিচ্ছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ক্রিসেন্ট গ্রুপকে জনতা ব্যাংক পাঁচ বছরে বেআইনিভাবে ৫ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন সুবিধা দিয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে এই গ্রুপের ঋণ জালিয়াতির ঘটনা শুরু হয়। ২০১৪ সালে এসে এর ব্যাপকতা বাড়তে থাকে। ২০১৪ সালের ২৮ অক্টোবর এমডি পদে যোগ দেন আবদুস সালাম। তিনিও এই গ্রুপের ঋণের লাগাম টেনে ধরেননি। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে গ্রাহককে সবচেয়ে বেশি ঋণ দেয়া হয়।