সাবা’র কর্মীরা ছুটে চলেছে বানভাসি মানুষের দোয়ারে

দুঃখের রজনী যেমন শেষ হতে চায় না, তেমনি বানভাসি মানুষের কাছে এখন একেকটি দিন যেন দুর্বিষহ কষ্টের অনন্তকাল। বন্যায় অনেক দরিদ্র পরিবারের বাড়িঘর, সহায়-সম্পদ ও জীবন-জীবিকা ধ্বংসের মুখে। বহু রাস্তাঘাট, দোকানপাট, বসতভিটা, জমি-জিরাত ও ফল-ফসল বিলীন হয়ে গেছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্র বা বিত্তশালী মানুষের কাছ থেকে খুব একটা সহযোগীতা পাচ্ছে না তারা। ফলে বন্যাকবলিত অঞ্চলের অসহায় বানভাসি মানুষ কতটা দুঃখ-কষ্টের মধ্যে পড়েছে, তা সহজেই অনুমেয়।

তবে, পনিবন্দি দুখী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিচালিত সেচ্ছাসেবী সংগঠন সোশ্যাল এসোসিয়েশন ফর বাংলাদেশ এ্যাডভান্সমেন্ট (সাবা)। নিজেদের সাধ্যমতো বানভাসি মানুষের সহযোগিতায় হাত বাড়িয়েছে। তারা চাল, ডাল,তেল, লবণ এবং ওরস্যালাইন সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসমগ্রী নিয়ে শত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে সাবা’র নিষ্ঠাবান কর্মীরা পৌছে দিচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দোয়ারে। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (২৭ আগষ্ট) নওগাঁর মান্দা উপজেলার বন্যা কবলিত মানুষদের সহযোগিতা করেছে সাবা। ৩দিনব্যাপী উপজেলার ২০০ পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে সংস্থাটি। এমনকি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ২০ প্রতিবন্ধী পরিবারকেও সহযোগিতা করে।

তারা মান্দার কালিকাপুর ইউনিয়নের শীলগ্রাম, পাকুরিয়া, বাথইল, জসরাই, মাউল গ্রাম ও বিস্নপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে সহায়তা পৌঁছায়। ত্রাণসামগ্রী বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন, সাবা রাজশাহী অঞ্চলের এস. এম. এমদাদুর রহমান, আবদুল মুকিত। ছিলেন নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিরা। তারা হলেন, বিশিষ্ট সমাজসেবক নুরুল ইসলাম, মমতাজ হোসেন, আফতাবউদ্দিন, কসিমুদ্দিন, ইমরান আলি, জালালুদ্দিন, আবদুল হান্নান , খোরশেদ আলম, আলমগীর হোসেন, হাসান, শফিকুল ইসলাম, আলামীন, আবদুল খালেক প্রমুখ। সাবা’র সার্বিক কার্যক্রমের তত্বাবধানে রয়েছেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা ও নিউজবিডিইউস’র সম্পাদক এস এম জাহিদুর রহমান।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে অসহায় মানুষ যখন পানিবন্দী অবস্থায় জীবন যাপন করছে, তখন সমাজের বিত্তবানদের বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও সাহায্য-সহযোগিতা করা ইসলামের বিধান। টাকাপয়সা, খাদ্য, বস্ত্র, পানি, ওষুধ—যার যা কিছু আছে, তা নিয়েই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্যাদুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসার এখনই সময়। আগামীতেও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো অব্যহত থাকবে বলে জানান সাবা’র এই কর্তাব্যক্তি। চলতি বছরের মার্চ মাসে পিছিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশী মিলে দুস্থ-অসহায় ও দেশ-জাতির কল্যাণের নিঃস্বর্থে কাজ করতে সাবা’র কার্যক্রম শুরু করে। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশের মানুষের সহযোগিতা করে বেশ সাড়া ফেলেছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে সাবা’র কার্যক্রম দেখে অত্যন্ত খুশি সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় বিশিষ্ট জনেরা দাবি জানান, গরীব-দুখি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এই কার্যক্রম সাবা যেন আগামী দিনেও অব্যহত রাখে। করোনার এই ক্রান্তিলগ্নে ইতোমধ্যে কয়েক হাজার দুস্থ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করেছে সাবা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে দেশব্যাপী দিচ্ছে টেলিহেলথ সেবা। এছাড়া কর্মসংস্থানের জন্য মহিলাদেরকে সেলাই মেশিনও কিনে দিয়েছে সেবামূলক সংগঠনটি। করোনা দুর্যোগে শতাধিক শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা ও খাদ্য সামগ্রী দিয়েছে। এমনকি বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যয়ভর গ্রহণের দায়িত্ব নিয়েছে তারা।