সাপাহারে ইউএনও ও ভূমি কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করায় আটক ২

সাপাহার প্রতিনিধি:

সাপাহারে নির্বাহী অফিসার ও ভূমি সহকারী কর্মকর্তার স্বাক্ষর ও সীলমোহর জাল করে জমির খাজনা খারিজ করে দেওয়ায় অভিযোগে ভূমি অফিসের চেইনম্যান হারুন- অর রশিদ ও তার সহযোগী ইউনুস আলীকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, উপজেলার কুচিন্দা গ্রামের মৃত রহিম উদ্দীনের পুত্র চাঁন মোহাম্মাদ (চানু) কিছু দিন পূর্বে কুচিন্দ মৌজায় ৫ শতাংশ জমি ক্রয়ের জন্য উক্ত জমির খাজনা খারিজ করার বিষয়ে একই গ্রামের মৃত আয়েন উদ্দীনের পুত্র ইউনুস আলী (৩৭) কে ৫০ হাজার টাকা চুক্তি করে নগদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করে। এরপর ওই ব্যক্তি গত ২৫ মে উপজেলায় এসে জমির খাজনা খারিজের কাগজপত্র চান মিয়াকে বুঝে দেন। খাজনা খারিজের কাগজপত্র হাতে পেয়ে চাঁন মোহাম্মাদ উক্ত জমি রেজিস্ট্রেরী করার জন্য উপজেলা সাব রেজিস্ট্রেরী অফিসে যান। সেখানে তার খাজনা খারিজের কাগজপত্রগুলি দেখে অফিসের মহুরীগন সন্দেহ প্রকাশ করলে তাৎক্ষনিক সে কাগজপত্রগুলি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট উপস্থিত হন। এ সময় উক্ত অফিসে এলাকার জাতীয় সংসদ সদস্য বাবু সাধন চন্দ্র মজুমদার উপস্থিত থাকায় বিষয়টি উনারও দৃষ্টিগোচর হয়। এ সময় ওই ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে জাল কাগজ প্রস্তুতকারী ইউনুস আলী ও তার সহযোগী জাল কাগজ তৈরীর মুল হোতা উপজেলা ভূমি অফিসের চেইনম্যান হারুন অর রশিদকে এমপি মহোদয়ের সম্মুখে উপস্থিত করা হলে তারা অকপটে তাদের কৃত কর্মের কথা স্বীকার করেন। সঙ্গে সঙ্গে এমপির নির্দেশে তাদের উভয়কে থানা হাজতে পাঠানো হয়।

পরে বিষয়টি নিয়ে ১৮৬০ সালের পেনাল কোড এর ৪১৯/৪৬৫/৪৬৬/৪৬৭/৪৬৮/৪৭৩ ও ৪৭৪ ধারায় অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারণা করে জমির কাগজপত্র জাল স্বাক্ষর ও সীলমোহর দিয়ে সঠিক বলিয়া উপস্থাপন করার অপরাধে মামলা দায়েরের পর ২৬ মে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

এর আগেও সাপাহার উপজেলা ভূমি অফিস সহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলিতে বহুবার টাকার বিনিময়ে নিরীহ মানুষকে ঠকিয়ে ভূয়া খাজনা খারিজ করার বিষয় হাতে নাতে ধরা পড়লেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর হতে তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়নি।  এই জালিয়াত চক্রের সাথে শুধু ওই চেইনম্যান নয় ভূমি অফিসের অনেক কর্তাই জড়িত বলে এলাকার অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।

এ ছাড়া প্রায় প্রতিটি খাজনা খারিজে নির্ধারিত অংকের টাকার বহিঃভুত অতিরিক্ত টাকা ছাড়া কোন খাজনা খারিজ হয়না বলেও অনেক ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। কোন সাধারণ মানুষ তাদের জমি জমার খাজনা খারিজ করতে এলেই যত বিড়ম্বনায় পড়েন। যে অতিরিক্ত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে সেই খাজনা খারিজগুলি মাসের পর মাস ধরে ঘুরতে থাকলেও কখনও তার কাজ শেষ হয়না।

সাপাহার ভূমি অফিসের অনিয়মতান্তিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করে এলাকাবাসীদের হয়রানীর হাত থেকে রক্ষার জন্য উপজেলাবাসী অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

উল্লেখ্য যে, ইতোপূর্বেও ওই চেইনম্যান হারুন সাপাহার ভূমি অফিসে থেকে অন্যান্য অসাধু কর্তাদের সহযোগীতায় অসংখ্য মানুষের ভূয়া খাজনা খারিজ করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অনেকেই জানিয়েছেন।

স/অ