রাজশাহীতে সাঈদীকে নিয়ে পুলিশ পরিদর্শকের ফেসবুক পোস্ট, পার্বত্য জেলায় শাস্তিমূলক বদলি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কোর্ট ইন্সপেক্টর খাইরুল ইসলামকে আমর্ড পুলিশ ব্যাটেলিয়নের (এপিবিএন) পার্বত্য জেলায় শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে ।

আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে তাকে বদলি করা হয়। গত ১৪ আগস্ট দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ওইদিন রাতেই পুলিশ ইন্সপেক্টর খাইরুল ইসলাম শোক জানিয়ে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দেন। তাতে তিনি লেখেন- ‘কোরআনের পাখি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেমে দ্বীন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হুজুর আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে পরলোকে গমন করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহ হুজুরকে জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মাকাম দান করুন।’ পুলিশ ইন্সপেক্টর খাইরুলের ফেসবুক পোস্টটি নজরে আসার পর আরএমপি কমিশনার বিজয় বিপ্লব তালুকদার বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে। তবে পোস্টটি দেয়ার কিছুক্ষণ পরই তা ডিলিট করে দেন ইন্সপেক্টর খাইরুল ইসলাম।

এদিকে, আরএমপির সাইবার ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) উৎপল কুমার চৌধুরী তদন্তে নিশ্চিত হয়েছেন ইন্সপেক্টর খাইরুল ইসলামের ফেসবুক আইডি থেকেই পোস্টটি প্রকাশ করা হয়েছিল। বুধবার তিনি পুলিশ কমিশনার বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইন্সপেক্টর খাইরুল ইসলাম মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক জামায়াত নেতাকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে অসদাচরণ করেছেন। এতে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তিনি পুলিশ বিভাগে কর্মরত একজন সরকারি কর্মকর্তা। এ ধরনের পোস্ট সরকারি চাকরিবিধি ও শৃংখলা পরিপন্থী। বুধবারই পুলিশ সদর দপ্তরকে তদন্ত প্রতিবেদনটি পাঠিয়ে দেন মহানগর পুলিশ কমিশনার বিজয় বিপ্লব তালুকদার। বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ইন্সপেক্টর খাইরুল ইসলামকে শাস্তিমূলক বদলির আদেশ জারি করা হয়।

আরএমপির অপরাধ ও শৃঙ্খলা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত কমিশনার বিজয় বসাক জানান, ইন্সপেক্টর খাইরুল ইসলামের ফেসুবক পোস্টটি নিয়ে তদন্ত করা হয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তদন্ত প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে করণীয় নির্দেশনা পেতে আরএমপি থেকে পুলিশ সদর দফতরে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকেই তাকে বদলির নির্দেশ আসে। ঘটনার বিষয়ে পুলিশ পরিদর্শক খাইরুল ইসলাম বলেন, তিনি সরল মনে পোস্টটি দিয়েছিলেন। পরে বুঝতে পারেন সেটি দেয়া তার ঠিক হয়নি। কিছু সময় পর তিনি পোস্টটি ডিলিট করে দেন। এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে তিনি রাজি হননি।