সাইফুল্লাহ হত্যায় ১৫ জনের নামে প্রতিবেদন

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নিহত ছাত্রলীগ নেতা খালিদ সাইফুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। হত্যাকাণ্ডের দুই মাস ২৬ দিন পর গত বুধবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কুণ্ডু গোপীদাস।

 

জানা যায়, তদন্ত প্রতিবেদনে ১৫ জন অপরাধীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

 

এ সময় তদন্ত কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নির্দেশক ও পরামর্শক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ এবং সদস্য-সচিব ও প্রক্টর মো. আইনুল হক উপস্থিত ছিলেন।

 

গত ৩১ জুলাই দিবাগত রাতে অর্থাৎ আগস্টের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে মোমবাতি প্রজ্বালনের পর ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সাইফুল্লাহ নিহত হন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সপ্তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন।

 

১ আগস্ট সকালে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় (৬২তম) বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের বন্ধ করার পাশাপাশি ওই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অতিদ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হলেও বহু অপেক্ষার দুই মাস ২৬ দিন পর নানা প্রমাণ ও সাক্ষ্যের সঙ্গে দুই পাতার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সাক্ষ্য এবং তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি। কোনো শাস্তির জন্য সুপারিশ না করে তদন্তে প্রায় ১৫ জন অপরাধীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে এমনটি জানা যায়। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী এবার শুধু বিচারের প্রত্যাশায় দিন গুনছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা।

 

তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মাদ আইনুল হক বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন যে কয় পৃষ্ঠারই হোক না কেন, তদন্তে সর্বোচ্চভাবে চুলচেরা বিশ্লেষণ আনা হয়েছে।’

 

তদন্ত প্রতিবেদনের দীর্ঘসূত্রতা এবং শাস্তির সুপারিশের বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক কুণ্ডু গোপীদাস বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের অর্পিত তদন্তকাজ শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। শাস্তির বিষয়টি সিন্ডিকেট দেখবে। তদন্ত কমিটি শাস্তির বিষয়ে সুপারিশ করে না।’

 

তদন্তে সংঘর্ষের ঘটনার কারণ কী দেখানো হয়েছে এ বিষয়ে কাছে কোনো মন্তব্য করেনি তদন্ত কমিটি।

 

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বাসিন্দা খালিদ সাইফুল্লাহর বাবা মো. জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি আবেগতাড়িত হয়ে পেড়েন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মতো মানুষদের কথা আপনারাই জাতির কাছে তুলে ধরেন। আমার ছেলে সাইফুল্লাহ জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে নিহত হয়েছে। ও আমাদের শোকে ভাসিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিচারের জন্য উদ্যোগ নেবেন বলে আশা করি। আমি ছেলেকে তো আর ফিরে পাব না তবে আর যেন কোনো বাবাকে এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সন্তানহারা হতে না হয়। আমি ছেলের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’

 

এ দিকে আগস্টের সংঘর্ষের কারণে আতঙ্কের রেশ কাটেনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মাদ আইনুল হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পর্যবেক্ষণ করছে। সব ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি কঠোর হাতে দমন করা হবে।’

সূত্র: এনটিভি