নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁ থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক প্রথম সংবাদ’ পত্রিকার সম্পাদক ও জেলা প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি সাংবাদিক আজাদ হোসেন মুরাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে নওগাঁর মান্দায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলার প্রসাদপুর বাজারে প্রধান সড়কে মান্দা উপজেলা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।
মান্দা উপজেলা প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারন সম্পাদক আব্দুল মজিদ সম্রাটের সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক কমরেড আব্দুস সোবহান, সদস্য কমরেড সেকেন্দার আলী, ওসমান আলী, একুশে ফাউন্ডেশনের সভাপতি খন্দকার আব্দুর রহিম, সাংবাদিক আব্দুল কাউয়ুম, গোলাম রাব্বানী, মাহবুবুজ্জামান সেতু, আব্বাস আলী, দলিল লেখক মফিজ উদ্দিন, মাহবুব, মিঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, জেলার মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুর ইউনিয়নের খোর্দ্দনারায়নপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম মাস্টারের ছেলে জেলার বহুল আলোচিত ভন্ড কবিরাজ জাহাঙ্গীর আলম স্বপন। গত ৫/৬ বছর আগে হঠাৎ করে তার বাড়ির সামনে ভন্ড কবিরাজ স্বপন মাজার শরিফের জ্বিন ও মাসনা (ভূত-পেত্নী) তারানোর নামে ঝাড়-ফোক ও অপচিকিৎসা কবিরাজের ব্যবসা খুলে বসেন। প্রথম পর্যায় একটি চক্রের মাধ্যমে দিয়ে এ প্রতারণা চিকিৎসা শুরু করেন।
বছর খানেকের মধ্যেই স্থানীয় একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এ চিকিৎসা খবর ছড়িয়ে দেয় বিভিন্ন অঞ্চলে। এরপর প্রতিদিন সকালে ছুটে আসা শত শত সাধারণ মানুষদের ঝাড়-ফোক দিয়ে চিকিৎসার নামে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। আর চিকিৎসার নামে রোগীদের মারপিটও করা হয়।
এ নিয়ে জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় বিভিন্ন সময় সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় বার বার আইনের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে থাকেন। এমতাবস্থায় গত বছর ১৮ নভেম্বর ঝাঁড়-ফোক ও অপচিকিৎসার করার সময় নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. মোজাহার হোসেন পুলিশের সহযোগিতায় হাতেনাতে আটক করেন। পরে ওই দিন রাতেই স্বপনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জেল খেটে বের হয়ে আসার পর তিনি আবারও প্রশাসনের নাকের ডগায় তাঁর পুরনো পেশায় ফিরে যান।
শুরু করেন আবারও ঝাঁড়-ফোক ও অপচিকিৎসা। এমতাবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগে জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জনসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এ ছাড়াও ভন্ড কবিরাজ স্বপন অন্যান্য মামলায়ও গ্রেফতার হয়েছে।
গত ২৬ অক্টোবর ভন্ড কবিরাজ স্বপনের বিভিন্ন অপচিকিৎসা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন সাংবাদিক মুরাদ। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। ভন্ড কবিরাজ তাঁর অপকর্ম ঢাকতে পরবর্তীতে সাংবাদিক আজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগের পর কোনোরকম অনুসন্ধান কিংবা তদন্ত ছাড়া ও গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই গত ৬ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১ টার দিকে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা সাংবাদিক আজাদ হোসেন মুরাদকে গ্রেফতার করে।
মানববন্ধনে জেলা এবং উপজেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সচেতন মহল অংশ গ্রহণ করে।
বক্তারা সাংবাদিক আজাদ হোসেন মুরাদকে গ্রেফতারের ঘটনা দুঃখজনক ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
স/শ