রাজশাহীতে সাংবাদিকের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজির ঘটনায় মিলন আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক :

পুরো রাজশাহী জুড়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক পরিচয় শেষে এবার প্রবীণ এক সাংবাদিকের নাম ভাঙিয়ে পুলিশের কাছে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে আটক হয়েছেন এক প্রতারক ভুয়া সাংবাদিক শিবলি সাদিক মিলন।

তিনি নিজেকে ‘চ্যানেল ফোর’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন। এর আগে তিনি বিটিসি নামের একটি অনলাইন পোর্টালে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিলেও সেই পত্রিকার সম্পাদক এহেন আচরণের জন্য গত কয়েক মাস আগে বিটিসি নিউজ থেকে বের করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে ।

জানা যায়, প্রতারক ভুয়া সাংবাদিক শিবলি সাদিক মিলন গত কয়েক বছর থেকে নিজেকে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পুরো রাজশাহী জুড়ে চালিয়ে যাচ্ছিল তার চাঁদাবাজির রাজত্ব। তার এমন কর্মকান্ডে রাজশাহীর সাংবাদিক মহলও তার ওপরে অতিষ্ট ছিলো। শুধু সাংবাদিক মহলই নয় বিভিন্ন কল কারখানা ও সরকারী বে-সরকারী প্রতিষ্ঠান, এমনকি পুলিশের সদস্যরাও তার এমন কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়েছিলো । এর আগে বিএসটিআই অফিস, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পুলিশ বক্সসহ কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়ি, বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তাসহ একাধিক জনকে রাজশাহী প্রেসক্লাবের যুগ্ন সম্পাদক নুরে ইসলাম মিলনের নামের সাথে তার নামের মিল থাকার সুযোগ নিয়ে কৌশলে সে নিজেকে রাজশাহী পেসক্লাবের যুগ্ন-সম্পাদক পরিচয় দিয়ে তার স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য চাঁদাদাবি করেছিলো।

এছাড়াও গত দুইমাস আগে মহানগরের মতিহার থানা এলাকায় (১৮বছর পূরনে ৩ দিন বাঁকি) এক গরীব কিশোরীরসাথে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বিয়েরদিন প্রতারক সাংবাদিক শিবলি সাদিক মিলনসহ আরো ৫/৬জন বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়ে বাল্যবিবাহ হচ্ছে বলে তাদের বিয়ে বন্ধ করে দেয়। এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বাল্যবিবাহ করছে এমন সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক তাদের ১৪ হাজার টাকা দিলে তারা সেখান থেকে চলে আসে। এমন ঘটনায় ঐ কিশোরীর সঙ্গে বিয়ে হয়নি সেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের।

মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই নাসির আহমেদ জানান, গত শনিবার রাতে তার হাসপাতালে ভর্তি সিজারিয়ান স্ত্রীর ইনজেকশনের জন্য টাকা চেয়ে এক সিনিয়র সাংবাদিককের নামে একটি চিঠি আমাকে দেয়। আমি তাকে গতকাল রোববার আসতে বলি। তারপর ওই সিনিয়র সাংবাদিক পাঠিয়েছেন কি না তা যাচাই-বাছাই করার জন্য জিজ্ঞেস করা হলে তিনি পাঠাননি বলে জানান।

পরে রোববার রাতে মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে টাকা নেয়ার জন্য আসলে সাংবাদিক পরিচয় দানকারী শিবলি সাদিক মিলনকে আটক করে জিজ্ঞেস করা হলে বেরিয়ে আসে আসল রহস্য।

তিনি বলেন, তিনি (মিলন) নিজেই প্রবীন সাংবাদিকের নামে চিঠিটি লিখে নিয়ে এসেছেন টাকা নেওয়ার জন্য। তার স্ত্রী অন্তস্বত্তা এ ঘটনা সত্য হলেও তার স্ত্রীর সিজার করার ঘটনাটি মিথ্যে। মাদক(ফেন্সিডিল) খাওয়ার জন্যই প্রবীণ সাংবাদিকের নাম দিয়ে বেশি অর্থ পাওয়ার লোভে প্রতারণার চেষ্টা করছিলো প্রতারক মিলন।

আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহী প্রেসক্লাবের যুগ্ন সম্পাদক সাংবাদিক নূরে ইসলাম মিলন বাদি হয়ে তার নামে প্রতারনার মামলা দেয়। তাকে প্রতারনার মামলায় আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়েছে।

স/অ