সরকারি জমি দখল করে যুবলীগ নেতার বালু ব্যবসা!

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

বরগুনার আমতলীর চাওড়া ইউনিয়নের ডাক্তার বাড়ি এলাকায় সরকারি খাসজমি ও সড়কের দুই পাশ দখল করে এক যুবলীগ নেতা ও স্থানীয় একটি অসাধু চক্র বালু ও খোয়ার ব্যবসা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে খেকুয়ানী বাজার থেকে ডাক্তার বাড়ি পর্যন্ত সড়কটিতে বড়-বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুই ইউনিয়নের সংযোগকারী খেকুয়ানী বাজার সংলগ্ন লোহার সেতুটি।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, খেকুয়ানী বাজার সংলগ্ন চাওড়া নদীর ওপর নির্মিত লোহার সেতুর পূর্বাংশের সংযোগ সড়কের দুই পাশ দখল করে বালু ও খোয়া স্তুপ করে রাখায় প্রায়ই সেখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। এদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে, অবৈধভাবে সরকারি খাসজমি ও সড়কের দুই পাশ দখলমুক্ত করতে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, খেকুয়ানী বাজার ও ডাক্তার বাড়ি এলাকার মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য হয় নির্মিত লোহার সেতু। সেতুর দুই পারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও নারী (আলিম) মাদরাসা ও দুটি বাজার রয়েছে। ওই সেতুটি পার হয়ে দুই ইউনিয়নের মানুষ যেমন চলাচল করে ও তেমনি সড়কপথে যানবাহনে করে উপজেলা শহরে যাতায়াত করে। ১৫-২০ বছর ধরে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র সেতু সংলগ্ন চাওড়া নদীর চর (সরকারি খাসজমি) দখল করে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে জমি ইজারা নেয়। কৌশলে ওই জমির সামনে থাকা চাওড়া নদীর চরের সরকারি খাসজমি অবৈধভাবে দখল করে সেখানে বালু ও ইটের খোয়া স্তুপ করে রেখে পরে তা বিক্রি করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, আমতলী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তালেব গাজীর ছত্রছায়ায় গোলাম মস্তফা হাওলাদার, নূর উদ্দিন, ইকবালসহ আরো কয়েকজন ব্যবসায়ী বালু ও ইটের খোয়া স্তুপ করে বছরের পর বছর ব্যবসা করছেন।

পথচারী সোহাগ মিয়া ও আমিন উদ্দিন বালিকা আলিম মাদরাসার শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসি জানায়, প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে আমাদের ওই সড়ক দিয়ে ও সেতু পার হয়ে চলাচল করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে সড়কের খানাখন্দের মধ্যে পানি জমে থাকায় কোনোভাবেই ওই সড়ক দিয়ে আমরা চলাচল করতে পারি না।

এ বিষয়ে জমি দখলকারী বালু ব্যবসায়ী গাজী ট্রেডার্সের মালিক ও যুবলীগ নেতা আবু তালেব গাজী বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে কয়েক বছর ধরে বালু ও খোয়ার ব্যবসা করছি।

খেকুয়ানী বাজার থেকে ডাক্তার বাড়ি পর্যন্ত সড়কটি যান চলাচলে অনুপযোগী ও সংযোগ সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, সেখানে আমি এখন ব্যবসা করি না। সড়কের পাশের সরকারি জমি দখল করে ব্যবসার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

গুলিশাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এমনকি সেতু দিয়ে ভাড়ি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, সড়কের দুই পাশে রাখা বালু ও ইটের খোয়ার স্তুপ অপসারণ, সড়ক সংস্কার ও সরকারি জমি উদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সূত্র: কালের কণ্ঠ